শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুলের বাণী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৬ পিএম, ৯ অক্টোবর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:২৭ এএম, ১৬ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেন।
শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে তারেক রহমান বাণী-
"শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে আমি স্বৈরাচার বিরাধেী আন্দোলনের নির্ভিক সৈনিক শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ ৯০'র গণতন্ত্র হত্যাকারী এরশাদ বিরাধেী আন্দোলনে একটি অবিস্মরণীয় নাম। রক্তস্নাত ঐ আন্দোলনের ফলে মৃত গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরাধেী গণআন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে গিয়ে শহীদ জেহাদ পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেন। তার আত্মদানের ধারা বেয়েই সে বছর সংঘটিত হয় গণঅভ্যুত্থান, পতন হয় স্বৈরশাসক এরশাদের।
৮২'র ২৪ মার্চ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল স্বৈরশাসক এরশাদ। গণতন্ত্রকে পূনঃপ্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্র সমাজে গণতন্ত্রের বিকাশের দৃঢ়-প্রত্যয় নিয়েই জেহাদ নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমরা তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে না পারলে তার আত্মা কষ্ট পাবে। স্বৈরাচারী এরশাদের পতন হলেও বর্তমানে আওয়ামী নাৎসিবাদের উত্তরণ ঘটেছে। গণতন্ত্রের চিহ্ন মুছে ফেলা হয়েছে। ক্ষমতা জবরদখলকারী সরকার রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধুলায় মিশিয়ে দিতে সার্বিক আক্রমণ শুরু করেছে। বিরোধেী দলের নেতাকর্মী, ভিন্নমত ও বিশ্বাসের ব্যক্তিদের পাশাপাশি গুম করা হচ্ছে মানুষের বাক-ব্যক্তি ও নাগরিক স্বাধীনতা। বিএনপি চেয়ারপার্সন গণমানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দী করে রাখার পর এখন গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। দেশে নৈরাজ্য বিভৎস আগ্রাসী চেহারায় বিরাজমান।
গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অপরিহার্য শর্ত হলো নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার এবং জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রীর মুক্তি নিশ্চিত করা। আর এজন্য আমাদের আরও সাহসী সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে। গণতন্ত্র মানে শুধুমাত্র নির্বাচন নয়, গণতন্ত্র মানে মানুষের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। আজ জনসাধারণের বুকের ওপর অগণতান্ত্রিক অপশক্তি জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে। তাই শহীদ জেহাদের আত্মত্যাগের প্রেরণাকে বুকে ধারণ করেই দেশী-বিদেশী অপশক্তির চক্রান্ত প্রতিহত, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্র পূণরুদ্ধার করতে হবে।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।"
শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে বাণী-
"শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে গণতন্ত্র পূণঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রসেনানী শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ও তাঁর অম্লান স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক অবিসংবাদিত নাম। তাঁর মহিমান্বিত আত্মদানের ফলেই স্বৈরশাহী এরশাদের পতন হয়। শুরু হয় সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্রের বিজয়ে তাঁর সাহসী ভূমিকার জন্য জাতি হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি।
কিন্তু অগণতান্ত্রিক স্বৈরাশাসক নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে নেই। এখন সেই পুরনো স্বৈরাচার বর্তমান নাৎসীবাদের সাথে মিলেমিশে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে জনগণকে দুঃস্বপ্নের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। পুরনো স্বৈরাচারের বদলে এখন নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদ কাযেম হয়েছে। আওয়ামী দুঃশাসনকে স্থায়ীত্ব দেয়ার জন্য এসময়ের বিপুল জনপ্রিয় নেত্রী 'গণতন্ত্রের মা' বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে রাখার পর এখন নানা বিধি-নিষেষ আরোপ করে গৃহবন্দী রাখা হয়েছে। দেশনেত্রীর ওপর এই নিপীড়ণের ঘটনায় প্রমাণিত হয়-এদেশে মানবতা ও মৌলিক অধিকার চরম বিপন্ন। শাসকগোষ্ঠীর চক্রান্তের কুটিল খেলায় গণতন্ত্রকে চূড়ান্তভাবে নিরুদ্দেশ করা হয়েছে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আওয়ামী অপশাসনের বিরুদ্ধে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে কঠিন সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করবে শহীদ জেহাদের আত্মদান। গণতন্ত্র এখনও বন্দী। এখনও গণতন্ত্রের জন্য রক্ত ঝরছে। যে স্বপ্ন ও আশা নিয়ে শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ সেদিন স্বৈরাচারীর বুলেট নিজের বুকে বরণ করে নিয়েছিলেন, সেই স্বপ্ন পূরণে রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের আজকের সংগ্রামের মূল লক্ষ্য। আর তাতেই শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের আত্মা শান্তি পাবে।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।"