এ সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই : নজরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ৭ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৩১ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সরকারের ইচ্ছা হলো যে কোনোভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা। আর লুটপাট করে নিজেদের ভাগ্য বদল করা।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নূরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওন নিহতের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জোন-৪ লালবাগ চকবাজার কামরাঙ্গীরচর থানা কমিটির উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্র কী আছে? ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ আছে? আমরা যুদ্ধ করেছিলাম যাতে দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে, কিন্তু যেখানে প্রতিদিন খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ে, প্রতিনিয়ত পরিবহনের ভাড়া বাড়ে, চিকিৎসার খরচ বাড়ে এ রকম একটা দেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করি নাই।’
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, তেলের মূল্য বৃদ্ধি, পানির মূল্য বৃদ্ধি, ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি, যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ করার কারণে আমার ভাই নূরে আলম, শাওন, আব্দুর রহিম, শাওন প্রধান ও আব্দুল আলীমকে খুন করা হলো।’
বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘মানুষ কষ্টে আছে, তার কষ্টের কথা বলছে। আর তা সমাধান না করে যে সরকার মানুষের বুকে গুলি চালায় সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। সেই সরকারকে আমরা মানি না, ওই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকারের পরিবর্তে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে আমাদের কাজ। আর যদি সেটা করতে পারি তাহলেই শুধু মানুষের কষ্ট দূর হবে। তাহলে মানুষের গুম খুন বন্ধ হবে।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা বলিনি আপনারা পদত্যাগ করেন, আমরা ক্ষমতায় বসব। আমরা বলেছি, আপনি পদত্যাগ করেন, অবৈধ সংসদ বাতিল করুন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করুন। জনগণকে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অবৈধ, ফ্যাসিবাদী, অত্যাচারী, হত্যাকারী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি এবং বিরোধী দল কেউ নির্বাচনে যাবে না। সে দাবি আদায়ের জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে এবং বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করছে। আমরা এই সরকারের বিদায় চাই। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সেই নির্বাচনে বিজয় হয়ে জনগণের সরকার কায়েম করতে চাই।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘এই সরকারকে হটানোর কোনো বিকল্প নেই। তারা ক্ষমতায় এসে ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করেছে। অন্যদিকে নাইট ক্লাবের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। এর জন্য একজন মাত্র ব্যক্তি দায়ী।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জনসভায় লোকসমাগম দেখে সরকার ভীত হয়ে গেছে। তারা বাধা দিচ্ছে, হামলা করছে। তবুও আমাদের জনসভায় লোকসমাগম ঠেকানো যায়নি। ইনশাআল্লাহ আমাদের আন্দোলন দমানো যাবে না। লড়াই করেই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে তারেক রহমানের সৈনিকরা ঘরে ফিরে যাবেন। এবার কোনো পাতানো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আমরা চাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতা মোশাররফ হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে ও হাজী শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শামীমুর রহমান শামীম, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ।
এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, মীর আশরাফ আলী আজম, হাজী মনির হোসেন, আনোয়ার পারভেজ বাদল, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, আরিফা সুলতানা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপনসহ ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল, শ্রমিক দল ও দলের বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।