দেশে ফ্যাসিবাদী নিষ্ঠুর শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১৬ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৩৩ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে ফ্যাসিবাদী নিষ্ঠুর শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের এই ঘোর দুূর্দিনের কালে আজিজুল হাসান দুলুর মতো একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মীর অকালে চলে যাওয়া আমাদের জন্য হৃদয় বিদারক। অকাল প্রয়াত খুলনা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আজিজুল হাসান দুলুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনীর ওপর অনুষ্ঠিত আলোচনা ও স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আজ বুধবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ আয়োজনে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকার যেনতেন ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। গত ৩১ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত জনদাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হয়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অংশ নেয়া মানুষকে আর গুলি করে হত্যা করা যাবেনা দাবি করে রিজভী বলেন, বাঁশের লাঠিতে জাতীয় পতাকা ধারণ করে শাসক দলের সকল ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিএনপির আন্দোলন এগিয়ে যাবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সরকার মিথ্যাচারী। তারা নিজেদের অপকর্মের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চায়। ইডেন করেজে কলংকজন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশে ও ভিসির প্ররোচনায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জে পুলিশের গুলিতে শাওন নিহত হলে এসপি বলেছে সে ঠেলাঠেলিতে মারা গেছে।
শেখ হাসিনা সম্রাঞ্জীর মতো দেশ শাসন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দেশের সমস্ত মিডিয়াতে তার জন্মদিনের সংবাদ ছাপতে বাধ্য করা হচ্ছে। গণমাধ্যমের মাথার ওপর ধারালো তরবারি ঝুলছে। গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে বন্দী রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক রহমান আন্দোলনের তরঙ্গ তৈরি করেছেন। গুম, খুন, অপহরণ, হামলা, মামলা করে আর আন্দোলন দমন করা যাবেনা।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সমাবেশে আলোচক ছিলেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।
মূখ্য আলোচক হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচন উপলক্ষে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। তা হলো ইভিএম এ ভোট গ্রহণ। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও সিইসিকে হুসিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, এ সব ধাপ্পাবাজী বাদ দেন। আগামী নির্বাচনে ইভিএম এ হবে না, তেমনি শেখ হাসিনার অধীনেও হবে না। বিএনপির নেতা-কর্মীরা আর কোনো তামাশার নির্বাচন বাংলার মাটিতে হতে দেবে না।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সব স্বৈরাচার দু’একটি দৃশ্যমান মেগা প্রকল্প দেখিয়ে উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে শোসন করে, শেখ হাসিনাও তাই করছে। উন্নয়ন এদেশের মানুষের হয়নি, হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। পাতি নেতাদের দেশে একাধিক বাড়ি-গাড়ি, আর বড় নেতাদের লন্ডন, আমেরিকা ও কানাডায় বেগম পাড়ায় বাড়ি হয়েছে।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীর সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুর বারী হেলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সাঈদ সোহরাব, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ রকিবুল ইসলাম বকুল, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ তারিকুল ইসলাম জহীর, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাবেক দল নেতা মোঃ জমির আলী। এ সময় খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির বিভিন্ন উপজেলা ও থানা থেকে দলের অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। স্মরণ সভাটি এক সময়ে বিশালসমাবেশে রূপ নেয়।
স্মরণ সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন এবং মরহুম আজিজুল হাসান দুলুর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন জেলা ওলামা দল সভ্পাতি মাওলানা ফারুক হোসেন।