আ'লীগ কোটিপতিদের সরকার বলেই তারা মানুষকে গুলি করে হত্যা করে : নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২০ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:০৪ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
‘কোটিপতিদের সরকার’ বলেই তারা মানুষকে গুলি হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছেন নজরুল ইসলাম খান।
আজ শুক্রবার বিকালে মোহাম্মদপুরের বছিলায় এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলন করতে গিয়ে আমার ভাই ভোলার নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়নগঞ্জের শাওন, গতকাল মারা গেলো মুন্সিগঞ্জের আরেক ভাই শাওন, যশোরে আন্দোলনে তাদের আক্রমনে আহত হয়ে আব্দুল আলিম গত কয়েদিন আগে মারা গেছে। আপনি খাবার দিতে পারবেন না, আপনি চাকুরি দিতে পারবেন না।”
‘‘মানুষ তার কষ্টের প্রতিবাদ জানাবে আর আপনি(সরকার) গুলি করে মেরে ফেলবেন। আর বলছেন, আমরা জনগণের সরকার। না। আপনারা বাংলাদেশে জনগণের সরকার নন। আপনারা কয়েকটি হাজার নতুন কোটিপতির সরকার, আপনারা ৪ কোটি নতুন দরিদ্র মানুষের সরকার নন। আমরা ওই চার কোটি দরিদ্র মানুষের কথা বলছি এবং তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে আমরা লড়ছি।”
দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘জিনিস পত্রের দাম এতোই বেড়েছে যে, বাংলাদেশে যারা হালাল উপার্জন করে তাদের আর চলার অবস্থা নাই, তাদের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তাদের ছেলে-মেয়ের মুখে খাবার দিতে পারে না। রোগের চিকিতসা করতে পারে না কারণ ঔষধের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে।”
‘‘এর প্রতিবাদে আন্দোলন-সংগ্রামে যখন মানুষ রাস্তায় নামছে পুলিশ গুলি করছে। আমাদের সহকর্মীদের খুন করা হচ্ছে। তাতে কি বিএনপির জনসভা বা আন্দোলনে লোক কম হচ্ছে কি? কমে নাই। এটাই আন্দোলনের ইতিহাস। জোর-জবরদস্তি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। আপনারাও পারবেন না।”
তিনি বলেন, ‘‘মিছে-মিছি জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে ঘৃনিত হবেন না। একমাত্র ক্ষমতাচ্যুত হয়ে একুশ বছর আসতে পারেন নাই ক্ষমতায়। আজকে যে অত্যাচার-নিপীডন-নির্যাতন করতেছেন এগুলো যদি বন্ধ না করেন তাহলে এবার ক্ষমতাচ্যুত হলে আর কবে ২১ বছর লাঘবে আল্লাহ জানে।”
‘‘আমরা গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বলতে চাই, আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। জনগণ ঠিক করবে কে ভালো, কে মন্দ, কাকে দায়িত্ব দেয়া যায়, কাকে দেয়া যায় না। আপনারা এই সুযোগটা গ্রহণ করুন। ভুল করবেন না।”
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আপনারা ভয় পেয়ে আমাদেরকে গুলি করছেন, মানুষকে গুলি করছেন। কিন্তু লাভ আছে? ১৯৬৯ এ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুজ্জোহা আর ক্যান্টর্মেন্ট সার্জেন্ট জহুরুল হককে মেরে ফেলা হয়েছিলো। আইয়ুব খান টিকতে পারছে-পারে নাই। নব্বইযের গণঅভ্যুত্থানে আমান উল্লাহ আমান, খোকন, নাজিমউদ্দিন আলমরা করেছে..এরশাদ টিকতে পারছে-পারে নাই। আপনারাও পারবেন না। এটাই ইতিহাস।”
‘‘আমি সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই, আগামী দিনে যে লড়াই সেই লড়াইয়ে অবশ্যই অবশ্যই আমরা বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ। বরাবরই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে জনগণ আমাদের পাশে ছিলো, এবারও আমাদের পাশে থাকবে। রাজপথের আন্দেোলনের জন্য আপনারা প্রস্তুত নিন। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ফয়সালা হবে রাজপথে।”
মহানগর উত্তর ৮ জোনের উদ্যোগে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ সারাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। এই সমাবেশে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে অসংখ্য নেতা-কর্মী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশ নেয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘‘সরকারকে বলি, আপনারা হামলা করে আমাদের হাড্ডি ভাংগতে পারেন, আমাদের মনোবল ভাগতে পারবেন না। আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। গণতন্ত্র মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই।”
ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক ও যুগ্ম আহবায়ক এবিএম রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সমাবেশে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, বিলকিস জাহান শিরিন, নাজিম উদ্দিন আলম, সেলিম রেজা হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, শামীমুর রহমান শামীম, নিলোফার চৌধুরী মনি, কাজী রওনাকুল ইসলামি টিপু, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, এসএম জাহাঙ্গীর, মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মহিলা দলের ফরিদা ইয়াসমিন, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিকুল ইসলাম, মহানগর উত্তরের মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, আতিকুল ইসলাম মতিন, আখতার হোসেন প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।