বিএনপি'র কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে তারেক রহমানের নিন্দা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫৬ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫১ এএম, ১৬ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
আজ সন্ধ্যা ৮টায় বনানীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি'র মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচি শেষে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি'র শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও ঢাকা আসার পথে মনোহরগঞ্জে বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু'র ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তাঁকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে আওয়ামী গুন্ডাবাহিনী। বরকত উল্লাহ বুলু'র অবস্থা সংকটাপন্ন। বনানীর হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়াল এবং হেনা আলাউদ্দিন, এ্যাডভোকেট রুনা, মহিলা দলসহ বনানী থানা ছাত্রদল ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এধরণের হামলাকে কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়েছেন বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।
আজ শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "বনানীতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ঢাকা আসার পথে মনোহরগঞ্জে বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুল এবং তাঁর সহধর্মিনী এবং তাবিথ আউয়ালের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা এবং বনানীতে নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করা কাপুরুষোচিত।
বর্তমান কর্তৃত্ববাদী ও নিষ্ঠুর আওয়ামী সরকারের আমলে কারো জীবনেরই কোন নিরাপত্তা নেই, ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আবার ঘরে নিরাপদে ফিরতে পারবে কি না সেটির কোন নিশ্চয়তা নেই। আওয়ামী লীগ সরকার গণবিক্ষোভের ভয়ে বিএনপি'র ওপর পৈশাচিক আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। এই কারণে তারা বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচির ওপর বন্দুকের ভাষা ব্যবহার করছে। আর এই নিষ্ঠুর আক্রমণে শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও রেহাই পাচ্ছে না। সহিংস হামলা, গুলিবর্ষণ, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের এমনই হিড়িক শুরু হয়েছে যে, সরকার এর মাধ্যমে গণতন্ত্রকেই বন্দী করতে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা করছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখন সরকারের বরকন্দাজ। তারা এখন রাষ্ট্রের বাহিনী নয়, এরা আওয়ামী লীগের অবৈধ ক্ষমতার প্রহরী। আজ বেগম সেলিমা রহমান, জনাব বরকত উল্লাহ বুল এবং তাবিথ আউয়ালকে গুরুতর আহত করার ঘটনা বর্তমান সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনে আরও একটি মাত্রা যোগ হলো।
দানবীয় শক্তির এহেন হিংস্র বহিঃপ্রকাশের বিরুদ্ধে দেশবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এই সরকারের বিদায় এখন নিশ্চিত। আমি অবিলম্বে উল্লিখিত বর্বরোচিত ঘটনায় হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহবান জানাচ্ছি। আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।"
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
পৃথক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "আজ রাত ৮টায় বনানীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি'র মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচি শেষে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি'র শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও ঢাকা আসার পথে মনোহরগঞ্জে বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু'র ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তাঁকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে আওয়ামী গুন্ডাবাহিনী। জনাব বরকত উল্লাহ বুলু এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বনানীর হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়াল এবং হেনা আলাউদ্দিন, এ্যাডভোকেট রুনা, মহিলা দলসহ বনানী থানা ছাত্রদল ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এধরণের বর্বরোচিত হামলার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এই হামলা সরকারের উপর মহল থেকেই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী দল যাতে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম বেগবান করতে না পারে সেজন্য নেতাকর্মীদেরকে ভয় পাইয়ে দিতেই সরকারের এই মরণঘাতি হামলা। সরকার একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনকে চিরস্থায়ী করার জন্য রক্ত ঝরানোর নীতি গ্রহণ করেছে। এই কারণে সম্প্রতি বিএনপি ঘোষিত সকল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকারবাহিনী ও তাদের দলীয় ক্যাডার'রা ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। নিজেরা চিরদিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা নিয়েই গোটা দেশকে সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে অন্ধকার গহব্বরের মধ্যে ফেলে দিতে চাচ্ছে। এরা এখন জনগণের সবচেয়ে বড় দুশমনে পরিণত হয়েছে। এরা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে নিরাপদহীন করে তুলেছে। নিজেদের অপকর্ম ঢাকতেই তারা দেশের বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমানকে আঘাত করতেও তারা দ্বিধা করেনি। আরেকজন জাতীয় নেতা বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী জনাব বরকত উল্লাহ বুলুকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর আহত করেছে। তাবিথ আউয়ালের মতো একজন তরুণ বিএনপি নেতাকেও তারা আক্রমণ করে ক্ষতবিক্ষত করেছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে মারাত্মক আহত করেছে। অবৈধ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বিবেকশুণ্য। তাই দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিতে তারা বিন্দুমাত্র কুন্ঠিত হচ্ছে না। সরকারের পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে টের পেয়েই তারা হিং¯্র হয়ে উঠেছে। তাদের পতন এখন অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
আমি অবিলম্বে উল্লিখিত বর্বরোচিত ঘটনায় হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহবান জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।"
দেশব্যাপী বিএনপি'র চলমান কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে বিএনপি'র উদ্যোগে জেলা, মহানগর ও উপজেলা সদরে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকায় উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশ আগামীকাল ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার বেলা ২-৩০ টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি'র উদ্যোগে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে উপরোক্ত কর্মসূচি সফল করার জন্য অনুরোধ করা হলো।