দুই কান কাটা সরকার গণ দাবী উপেক্ষা করছে : এমরান সালেহ প্রিন্স
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:১২ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:০১ পিএম, ৯ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
সরকারের দুই কান কাটা, সেজন্য গণ দাবী উপেক্ষা করছে উল্লেখ করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন সরকারের মন্ত্রী-নেতারা নির্লজ্জের মত আস্ফালন করে বলছে পদত্যাগের চাপে নাই। তিনি বলেন, সেতুমন্ত্রী প্রতিদিন আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। যারা চোখ থাকতে অন্ধ, তাদের কানে তুলা, পিঠে কুলা, অন্তর ভুলা, তারা চলমন আন্দোলনে গণ জোয়ার দেখতে পায় না, জনগণের চোখের ভাষা, মনের কথা পড়তে , শুনতে পায় না। সরকার উট পাখির মত বালুর মধ্যে মুখ গুজে দলীয় ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে হত্যা, গুম, হামলা, মামলা করে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকারের ব্যার্থতা, দুর্ণীতি, লুটপাটে সার, জ্বালানী তেল, নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। সারের সঙ্কট শুরু হয়ে গেছে। কৃষক সার পাচ্ছে না, ফসল উৎপাদন নিয়ে তারা দিশেহারা। সঙ্কট উত্তরণে সরকার উদাসীন।
তিনি সরকারকে বলেন, দমন নিপীড়ন বন্ধ করে চোখ মেলে জনগণের চোখের ভাষা পড়ুন, কান পেতে আহাজারি শুনুন। নচেৎ জনজোয়ারে ভেসে যেতে হবে।
গতকাল শুক্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এমরান সালেহ্ প্রিন্স ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা বাজারে ইব্রাহীম মার্কেট প্রঙ্গণে লোডশেডিং, জ্বালানী তেল, সার, নিত্যপণ্যের মূল্য ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি এবং ভোলা, নারায়গঞ্জে হত্যার প্রতিবাদে তৃণমূলে ধারাবাহিক বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদোগে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। বিক্ষোভ সমাবেশের পর বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল ধারা বাজারের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিন করে।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য, ধারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আরফান আলীর সভাপতিত্বে, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, নাদিম আহম্মদ, আবু হাসনাত বদরুল কবির, আবদুল হামিদ, আবদুল হাই, মিজানুর রহমান মিজান, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, বদরুল আহসান খান, মোতালেব হোসেন, প্রভাষক এমদাদ হোসেন, মওলানা মাহবুব হোসেন, আলী আযম খান দিপু, গুলজার আহমদ নাইম, চান মিয়া, মোতালেব হোসেন, জেলা ছাত্র দলের সভাপতি নাহিদ সাদমান ডুনন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা কাজিম উদ্দিন, আলী আশরাফ, রফিকুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, হিল্লোল মিয়া, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান আসিফ, জেলা যুবদলের সহ সভাপতি আবদুল আজিজ খান, প্রভাষক মাসুম বিল্লাহ, এম বি রায়হান, মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক হোসনে নীলু, সহ সভাপতি মনোয়ারা বেগম ময়না, উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবদুল গণি, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান, সদস্য সচিব আলিমুল ইসলাম, পৌর আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দুলাল, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান সুজন, ছাত্র দলের আহ্বায়ক নাইমুর আরেফিন পাপন, যুগ্ম আহবায়ক এম আর আল আমিন, সিরাজুল ইসলাম শাহীন, মোহাইমেনুল ইসলাম রবিন, ছাত্রদল নেতা আশরাফুল আলম, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব তাজবীর হোসেন অন্তর, যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক অনন্ত, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আকিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তৃতা কালে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, অনৈতিক ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিদেশীদের কাছে আশির্বাদ না চেয়ে কৃত অপকর্ম, অপরাধের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করুন। ভারত সফরে নাচ, কৃতজ্ঞতা সব দেখলাম, তিস্তার পানি আনতে দেখলাম না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে সীমান্তে গুলি চললো, প্রতিবাদ হলো না, উপহার পেলেন বাংলাদেশীর লাশ। মায়ানমার গ্রেনেড মারলো আকাশসীমা লঙ্ঘন করলো, সমুচিত জবাব নাই। সরকারের নতজানু নীতি দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই গণ বিচ্ছিন্ন সরকারকে কেউ দাম দেয় না। বাংলাদেশের জনগণ দূরে থাক, অনুবিক্ষণ যন্ত্র, দুরবীন দিয়ে খুজেও ভারত বা বিদেশী গণমাধ্যমও প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রাপ্তি খুঁজে পাচ্ছে না।
জনগণ আওয়ামী লীগের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, বিদেশীরাও একই পথে। তাদের কর্মী-সর্থকরাও সাথে থাকছে না। আওয়ামী লীগের সম্মেলন কর্মী, সমর্থকের অভাবে বাতিল হয়। একই ইউনিয়নে রাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে হাজার হাজার মানুষকে সাথে নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছি। আওয়ামী লীগ আজ শুধু জনবিচ্ছিন্নই নয়, কর্মী বিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ যেখানেই বিএনপি সেখানেই জনগণ, যেখানেই জনগণ সেখানেই বিএনপি। জনগণের সঙ্কটে, দুর্ভোগে বিএনপি জনগণের পাশে আছে উল্লেখ করে প্রিন্স বলেন, এই সঙ্কটের মধ্যেও আওয়ামী লীগ দুর্ণীতি, লুটপাট করছে।
চলমান আন্দোলন সরকার রক্তাক্ত করছে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, তারা ভয় পয়ে ভয় দেখাচ্ছে। জনগণ তাদের ভয়ে ভীত নয়। গুলি চালিয়ে হত্যা করে রক্ত ঝরিয়ে সাময়িক আতঙ্ক সৃস্টি করা যায়, আন্দোলন দমন করা যায় না। শহীদদের রক্ত ছুঁয়ে শপথ নিয়েছি, তাদের রক্ত বৃথা যেতে দেয়া হবে না। শহীদদের রক্তস্রোত জনদুর্ভোগ বিরোধী আন্দোলনকে এক দফা আন্দোলনে নিয়ে যাচ্ছে।