কোন সরকার আসবে তা ঠিক করবে জনগণ : গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০২ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১০:১৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকার যে চেষ্টা করছে, সেটা পারবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, কোন সরকার আসবে যাবে সেটা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ। ধাপে ধাপে আন্দোলন হবে। সরকার পতন কিভাবে হয়, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। রাজপথে প্রতিরোধ হবে। দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না, সরকারকে বিদায় নিতেই হবে।
আজ বুধবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে যুবদল নেতা শাওন হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের শোক র্যালি পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে র্যালিটি নাইটিঙ্গেল মোড়, আরামবাগ, ফকিরাপুল হয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। এ সময়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে যুবদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী শোক র্যালিতে যোগ দেয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেছেন। হয়তো কিছু দিতে গেছেন। বিনিময়ে কিছু দিন (ক্ষমতায়) থাকি বাংলাদেশের মানুষের ধারণা কিন্তু এ রকম। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশসহ গণতান্ত্রিক বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ক আজীবন ভালো। কিন্তু গোলামি না। বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। আমরা বন্ধুত্ব চাই, কর্তৃত্ব চাই না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যাবে নিশ্চিত থাকেন। যতই টালবাহানা করুক, অতীতে টালবাহানা করে পার পেয়েছে! এবার পার পাবে না। ভারতও সুজাতা সিংয়ের মতো আরেকজনকে পাঠিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচন করবে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখবে, সেই ভারতেরও কতটুকু শক্তি আছে, সেটাও সন্দেহ রয়েছে। কারণ বিশ্বায়নের এই যুগে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। গণতান্ত্রিক বিশ্বে দৃশ্যমান ফ্যাসিবাদের পক্ষে দাঁড়ালে গণতান্ত্রিক বিশ্বের বিবেক নড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ভারতকেও সাবধান হওয়ার বিষয় আছে, অতীতের নীতি পরিবর্তন ও সংশোধন করার প্রয়োজন আছে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে কোন সরকার ক্ষমতায়। ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশটির সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রীর অভ্যর্থনা জানানোর সমালোচনা করেন গয়েশ্বর।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকার যে চেষ্টা করছে, সেটা পারবে না। এই সরকারের বিরুদ্ধে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে-কেউ প্রকাশ্যে, কেউ অপ্রকাশ্যে। কেউ সরবে, কেউ নীরবে। পুলিশের গুলিতে শাওন, নুরে আলম ও আবদুর রহিম নিহতের ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, এই পুলিশের মধ্যে ভালো লোকও আছে। এদের মধ্যে চার ধরনের পুলিশ আছে। আমার ধারণা ছিল, যে পুলিশ শাওনকে গুলি করে হত্যা করল, কেন সে গুলি করল? তাকে ক্লোজ করে তার বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্টাল ব্যবস্থা নিবে। ভোলায় নুরে আলম ও আবদুর রহিমকে হত্যা করল। কোনো ব্যবস্থা নিল না। এর কারণ হলো এই সরকার নির্ভর করে পুলিশের ওপর। পুলিশ দিয়ে রাতে ভোট বাক্স ভরেছে। সে কারণে শেখ হাসিনা পুলিশের কনস্টেবলকেও ধমক দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। তাহলে আমাদের ধমক দেয়ার দুঃসাহস কোথায় পাই?
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটা জেলায় আমাদের এক লাখ কর্মী, সেখানে পুলিশ ৫০০। আমরা যদি পোশাক না চিনি অবস্থাটা কী হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ধাপে ধাপে আন্দোলন হবে। সরকার পতন কিভাবে হয়, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। রাজপথে প্রতিরোধ হবে। দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না, সরকারকে বিদায় নিতেই হবে।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণের সদস্য সচিব গোলাম মাওলা শাহীনের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ যুববিষয়ক সম্পাদক নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহানগরের খন্দকার এনামুল হক এনাম, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান রাজ, সাজ্জাদুল মিরাজ প্রমুখ।