চট্টগ্রাম চাঁদা না পেয়ে সেই ছাত্রদল নেতার পায়ে গুলি করেছিলেন ওসি!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১৬ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
গত ২০২১ সালের জুনে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হন মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। এতে কেটে ফেলা হয় তার একটি পা। এই ঘটনার এক বছর দুই মাস পর এসে সেই ছাত্রদল নেতার মা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সাইফুলকে আটক করে ওসি কামরুজ্জামান ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেয়ায় ক্রসফায়ারের নাটক সাজিয়ে তার পায়ে গুলি করেন ওসি।
গতকাল রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলামের মা ছেনোয়ারা বেগম (৫০) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় বায়েজিদ থানার তৎকালীন ওসি কামরুজ্জামান ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- বায়েজিদ থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মেহের অসীম দাশ, মো. সাইফুল ইসলাম, এএসআই মো. রবিউল হোসেন, এসআই কেএম নজিবুল ইসলাম তানভীর, এসআই নুর নবী ও বায়েজিদের আমিন জুট মিল এলাকার বাসিন্দা মো. শাহজাহান ওরফে আকাশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৬ই জুন রাতে পুলিশের সোর্স আকাশ ফোন করে নগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলামকে জরুরি কাজে অক্সিজেন এলাকার হোটেল জামানে দেখা করতে বলেন। সাইফুল সেখানে যাওয়ার পরেই বায়েজিদ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামানসহ পুলিশের সদস্যরা তাকে প্রাইভেট কারে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় সাইফুলের মোবাইল ও মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে রাত ১টার দিকে বায়েজিদ লিংক রোড এলাকায় নিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
এজাহার সূত্রে আরও জানা গেছে, সাইফুল চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওসি কামরুজ্জামান তার পায়ে গুলি করেন। এ সময় এসআই মেহের অসীম দাশও গুলি করেন সাইফুলের পায়ে।
পায়ে রক্তক্ষরণ হতে হতে জ্ঞান হারান সাইফ। পরে তার জ্ঞান ফিরলে বুঝতে পারেন বাম পায়ে ব্যান্ডেজ এবং চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি আছেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে সাইফুলকে ঢাকা জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার পা কেটে ফেলা হয়। পরে সাইফুলের কাছ থেকে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলে মিথ্যা মামলায় চালান দেওয়া হয়।
ছেনোয়ারা বেগম এজাহারে বলেন, আরেক ছেলে মো. সবুজকেও রাজনীতির কারণে একাধিক মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় জেলে আটকে রাখা হয়েছে। আমার পরিবারের সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমার অন্য ছেলেদেরকেও অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা ও গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে।