অতিশীঘ্রই আওয়ামী স্বৈরাচারের পতন হবে : ডা. জাহিদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৩ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৫৪ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন। ক্ষমতায় যাওয়ার আগে সাধারণ মানুষকে কথা দিয়ে ছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে, বিনামূল্যে সার দিবে। আজ চাল ও সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ন্যায়সঙ্গত যে আন্দোলন জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে যে আন্দোলন চলছে, সেই আন্দোলনকে নতসাত করবার জন্য ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাসী বাহিনী ও সরকারের পুলিশের পেটুয়া বাহিনীর হামলায় সারাদেশের অসংখ্য নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছেন, অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকালও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে একজন নিহত হয়েছেন আমরা অবিলম্বে হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগ দেশের জনগণ ও বিএনপিকে ভয় পায় বলেই এখনো বিভিন্ন জেলায় বিএনপির সভা, সমাবেশে হামলা করছে। কারণ তারা জানে যদি আমরা সভা-সমাবেশ করি তাহলে সরকারের সকল অপকর্ম আমাদের সত্য কথার মাধ্যমে উঠে আসবে, তাদের মুখোশ জনগণের কাছে উম্মোচন হবে। ইনশাআল্লাহ অতিশীঘ্রই এই স্বৈরাচারের পতন হবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট মহানগর বিএনপির উদ্যোগে র্যালী পরবর্তী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর রেজিষ্ট্রারী মাঠ থেকে শুরু হওয়া র্যালীটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। র্যালীতে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকীর সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী ও যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের শামীম, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান মামুন, সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, সরকার দাবি করে দেশে গণতন্ত্র আছে। আমি যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নিই দেশে গণতন্ত্র আছে, তাহলে প্রশ্ন করি, এত ভয় কেন? বিরোধী দল বিক্ষোভ কর্মসূচি করছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছে, মিছিল করছে। সেটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সেই টুকু সহ্য করার সাহস ও মুরোদ যদি না থাকে, রাজনীতি ছেড়ে দেন। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আর কয় দিন রাজনীতি করবেন? বিরোধী দলকে দমন করে আর কয় দিন রাজনীতি করবেন?
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা ড. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, হত্যা ও দমনপীড়নে বিএনপিকে দমানো যাবে না। এতো গুলি, এতো হত্যা এতো নির্যাতন এতো নিপীড়ন, এত গুম খুনের পরও বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বিএনপি সেই ফিনিক্স পাখির মত ধ্বংসাবশেষ থেকে জেগে উঠছে। এটাই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসক গোষ্ঠীর সবচেয়ে ভয়ের কারণ। সরকার যদি মনে করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের কয়দায় খেলা হবে বলে অন্ধকারে কিংবা খেলা হবে বলে আবারো দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করবে, তাহলে ভুল করবে। দেশের মানুষ আর কোন প্রহশনের নির্বাচনে অংশ নেবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রতিষ্ঠা করা গণতন্ত্রকে নষ্ট করছে দিয়েছে, সাধারণ মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন করেছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করেছে, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দেশের সাধারণ মানুষকে অসহায় করে তুলেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা এখন আবল তাবল বকছে, আওয়ামী লীগ এখন আইসিইউতে আছে, এখন তাদের বিদায়ের পালা। বিএনপি রাস্তায় নামছে, আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকী বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশাল থেকে বহু দলীয় গণতন্ত্র দেশে প্রতিষ্ঠা করেছেন। সকল সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি গ্রাম সরকার করে গ্রাম থেকে উন্নয়ন শুরু করেছেন। যিনি জেড ফোর্সের প্রধান, যিনি সেনা প্রধান স্বাধীনতার ঘোষক নিজে রণক্ষেত্রে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন তাকে নিয়ে গর্ব করা দরকার।
এসময় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হুমাইয়ুন কবির শাহীন, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, সুদিপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ, নজিবুর রহমান নজিব, সৈয়দ মঈন উদ্দিন সুহেল, সালেহ আহমদ খছরু। এছাড়ও সিলেট মহানগর বিএনপির ওয়ার্ড সমূহের আহবায়ক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নগরীর রেজিষ্ট্রারী মাঠে নারায়নগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি চলাকালে অতর্কিত হামলায় নিহত যুবদল নেতা রাজ আহমেদ শাওনের গায়েবানা জানাজা আদায় করা হয়। এর পর কালো ব্যাজ ধারণ করে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে র্যালীর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন নেতৃবৃন্দ।