কাদের সিদ্দিকী-জিএম কাদের বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫২ পিএম, ২৩ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১৩ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর (বীর উত্তম) সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় নেতা দেশের সার্বিক পরিস্থিতিসহ আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন। আসন্ন নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয় সে বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। তারা জ্বালানি তেলের দাম ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। তবে আসন্ন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নির্বাচনী জোট গঠন নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দুপুরে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতৃবৃন্দ বনানী এলে তাদের স্বাগত জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
এসময় জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও অ্যাড. সালমা ইসলাম। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার।
জিএম কাদের বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ মনে করছে কারচুপি করতেই ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ করতে চাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের পর থেকে বারবার সংবিধান কাটাকাটি করে এক ব্যক্তির শাসন কায়েম করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এখন সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে। কর্তৃত্ববাদী কোনো সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। মুক্তিযুদ্ধে চেতনা অনুযায়ী সমতা, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, কেউ দেশ ও মানুষের কথা বললেই তাকে দমিয়ে দেয়া হচ্ছে। কেউ সরকারের সমালোচনা করলেই তাকে দেশদ্রোহী হিসেবে গণ্য করা হয়। দেশের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, এমন বাংলাদেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। দেশে মানুষের অধিকার ও মর্যাদা নেই। গণভবনের একজন কর্মচারীর যে সম্মান আছে, তা এখন মন্ত্রী ও এমপিদেরও নেই। সরকারি কর্মচারীরা এখন লাগামহীন। মানুষের সম্মান ও মর্যাদার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে হবে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।
তিনি বলেন, মানুষের মর্যাদা ও অধিকার আদায়ের জন্যই এখন কট্টর বিএনপি ও কট্টর আওয়ামী লীগ থেকে সম-দূরত্ব বজায় রেখে সকল রাজনৈতিক শক্তিকে একই মোহনায় হাজির করতে হবে।
পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে জিএম কাদেরের গ্রহণযোগ্যতা আছে জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, কোনও কূটকৌশল নয়; শুধু সাহস নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালেই সাধারণ মানুষের আস্থার ঠিকানা হতে পারে জাতীয় পার্টি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে শেখ হাসিনার প্রতি সাধারণ মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল- বর্তমান সরকার মানুষের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন আর কারও জোটে নেই। কারও বি-টিম হয়েও রাজনীতির মাঠে নেই জাতীয় পার্টি। নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে জাতীয় পার্টি এগিয়ে চলছে।
পার্টির কো- চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেনি। প্রতিবাদ করেছিলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। বঙ্গবন্ধুর জন্য কাদের সিদ্দিকীর মতো এত ত্যাগ আর কারও নেই।
কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন ধার করে মানুষ এনে মন্ত্রী বানাতে হচ্ছে তাদের। মন্ত্রীরা অসংলগ্ন কথা বলেন। একেকজন একেক রকম কথা বলছেন।
কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, পল্লীবন্ধু একজন সৈনিক থেকে রাজনীতিতে এসে উন্নয়নের ইতিহাস রচনা করেছেন। দেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির ঐতিহ্য আছে। জাতীয় পার্টি আর কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতেই জাতীয় পার্টি পল্লীবন্ধুর স্বপ্নে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।