গৌরনদী আজ আওয়ামী সন্ত্রাসে বিপর্যস্ত এক জনপদ : জহির উদ্দিন স্বপন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪১ পিএম, ২২ আগস্ট,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৪১ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
গৌরনদী যেন এক সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। গত কয়েকদিনে লাগাতার আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গৌরনদী উপজেলা বিএনপি ও এর অংগ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর নির্বিচার হামলা, ভাঙচুর, হুমকি-ধামকি অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরিবার থেকে চাকুরিজীবী কেউই। এদের সকলের অপরাধ এরা বিএনপিকে সমর্থন করেন। সর্বশেষ আজ সকালে গৌরনদী উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সদস্য সচিব মনির মাস্টার, পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও ০১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার জাকির শরীফ, উপজেলা যুবদল নেতা জসিম(সরিকল)-এর উপর নির্মমভাবে হামলা হয়েছে।
এছাড়া গত (১৯ আগস্ট) বাটাজোড় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা পান্না হাওলাদারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দখল করে নেয়া হয়েছে পৌর ছাত্রদলের ০৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য সচিব কাওসারের পারিবারিক দোকান। এছাড়া বিএনপি বরিশাল উত্তর জেলার আহবায়ক কমিটির সদস্য বদিউজ্জামান মিন্টু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রিয়াজ ভূইয়া, পৌর যুবদলের আহবায়ক জাকির হোসেন বাচ্চু, পৌর যুবদল নেতা বুলবুল সরদার, নলচিড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জুয়েল সরদারের বাড়ীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এলাকায় চরম ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে।
উল্লেখ্য, গতকাল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক শফিকুল ইসলাম রোকনের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে তার বাম হাত ভেঙে ফেলা সহ গত সপ্তাহে গৌরনদী ছাত্রদলের আহবায়ক রাসেল হাওলাদার, সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক জহিরুল ইসলাম ও পৌর যুবদল নেতা জসিমের বাড়ী ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। সামগ্রিকভাবেই গৌরনদী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সন্ত্রাসের এক ভয়াবহ অভয়ারন্যে পরিণত হয়েছে। সমগ্র জনপদ আওয়ামীলীগের এই বাধাঁহীন সন্ত্রাসের কবলে পড়ে অসহায় জীবনযাপন করছে।
পরিস্থিতির ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে বরিশাল-১(গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া) সংসদীয় আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপি মিডিয়া সেলের প্রধান জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, “বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার মতো গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার মানুষ বর্তমান ফ্যাসিস্ট শাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট। যার মাত্রা এখানে আরো ভয়াবহ। গত ১২ বছরে এখানকার বিএনপির হাজার হাজার কর্মী আওয়ামী সন্ত্রাসী কার্যক্রমের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে ছাত্রদল ও যুবদলের দুই নেতাকে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে ঘরছাড়া করা হয়েছে। যারা ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অত্যন্ত মানবতর জীবনযাপন করছে”। আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসের কবলে পড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক জীবনই কেবল বিপন্ন নয়, সামাজিক,অর্থনৈতিক সহ ধর্মীয় উৎসব পালনের মতো অরাজনৈতিক বিষয় সমূহও চরমভাবে বিপন্ন বলে বিএনপি দলীয় সাবেক এই সাংসদ মন্তব্য করেন।
এ প্রসঙ্গে তিঁনি নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও আমার গ্রামের বাড়ীতে শায়িত মা-বাবার কবর জিয়ারত পর্যন্ত পারছি না”। দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে গত কয়েক বছর যাবৎ ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে কারো জানাজায় অংশগ্রহণ পর্যন্ত আওয়ামী সন্ত্রাসের কারণে বাঁধার শিকার হবার কথা তিঁনি অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন।
তিনি আজ আবারও বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর গৌরনদীতে আওয়ামী বর্বর সন্ত্রাসের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি আইনশৃংখলা বাহিনী ও সিভিল প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগে বিএনপি সহ ভিন্নমতের মানুষের উপর সরকার দলীয় সদস্যদের হামলায় জড়িত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী জানিয়েছেন।