দেশে গণতন্ত্র নাই, কূটনীতি নতজানু : জিএম কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৩ পিএম, ১৬ জুলাই,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫৩ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। একজন ব্যক্তি দেশ চালাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এমনটাই মনে করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ ইউটিউব টকশোতে এবারের আলোচনার বিষয় ছিল জাতীয় পার্টি ও আগামী নির্বাচন। এবারের আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি মনে করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কারো করার কিছু ছিলো না। সরকার এবং প্রশাসনের প্রভাব ছিলো সেই নির্বাচনে। ২০২৩ সালেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তার মতে, সবাই মিলে বসে একটা সমাধানে আসা প্রয়োজন।
জিএম কাদের জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনে যেহেতু বিএনপিও অংশ নিয়েছিলো তাই তাদের আশা ছিলো নির্বাচন কিছুটা হলেও সুষ্ঠু হবে। কিন্তু ওই নির্বাচন নিয়ে কেউ সন্তুষ্ট হয়নি বলে জানান তিনি। বলেন, নির্বাচনে সরকার ও প্রশাসন প্রভাব বিস্তার করেছিলো। জিএম কাদেরের কাছে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ একই রকম দল। তার মতে, কার্যক্রমের দিক দিয়ে তাদের কোনো পার্থক্য নেই। দুর্নীতি, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড দুই দলই করেছে। জাতীয় পার্টি টিকে থাকার সংগ্রাম করছে।
তিনি বলেন, টিকে থাকতে হলে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। তিনি মনে করেন, জাতীয় পার্টির আমলে সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি এবং দলীয়করণ হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে। বিচার বিভাগও সরকারের অধীনে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন কিনা এ প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, তার দলের শীর্ষ নীতি নির্ধারকদের সাথে কথা বলে নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তার দল।
জিএম কাদের বলেন, বর্তমানে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা কঠিন। কারণ মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে। বিরোধী দলকে হিংসাত্মকভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে। স্পেস না দিলে লক্ষ লক্ষ মানুষ আন্দোলনে এলেও লাভ হবে না। ২০১৪’র পর সেই পরিস্থিতি ধ্বংস হয়ে গেছে। ২০২৩-এর পর এই রাজনীতি থাকবে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায় বলে জানান তিনি। দেশে গণতন্ত্র নেই, এমনকি রাজনীতি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। দেশে এখন এককেন্দ্রিক শাসন চলছে বলে মনে করেন জিএম কাদের।
তিনি মনে করেন, কেবল ভারত বা যুক্তরাষ্ট্র নয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হল নতজানুমূলক। যে দেশ যেটা যেভাবে চাচ্ছে সেটা মেনে নিচ্ছে সরকার। কথা বলার সময় একটা বললে কাজের ক্ষেত্রে সেটা করছে না।
তিনি বলেন, এবারের বাজেটে ১৬ লাখ কোটি টাকা ঋণের উল্লেখ আছে। যারা ঋণ দিচ্ছে, তাদের শর্ত মেনে কাজ করা হচ্ছে। জিএম কাদের বলেন, সুশাসনের অভাবের দিক থেকে শীর্ষ বাংলাদেশ। তিনি মনে করেন, আগামী নির্বাচনের পর দু-একটি দল থাকবে না বা হয়ত নাম থাকবে, কিছু নেতা থাকবে, শেকড় থাকবে না। যে হেরে যাবে তারা রাজনীতিতে আর টিকবে না। হেরে যাওয়া দলের সাথে জাতীয় পার্টি থাকলে তারাও বিলীন হয়ে যাবে বলে মনে করেন জিএম কাদের। সরকার যেকোনভাবে জেতার চেষ্টা করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আলোচনার সবশেষে তিনি বলেন, বর্তমান কাঠামোতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন।