ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের কোনো রোডম্যাপ নেই-মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২২ এএম, ২১ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫২ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের কোনো রোডম্যাপ নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষ পাবে কি না তারও কোনো রোডম্যাপ নেই, কোনো প্ল্যানিং নেই। সরকার বলছে, আগে ২০ লাখ আসবে। এই ২০ লাখ কারা পাবেÑ সেটাও আমরা জানি না। প্রতি মাসে নাকি ৫০ লাখ করে আসবে, সেটা কারা পাবে তাও জানি না। আমরা যারা সাধারণ মানুষ আমরা কী কখন পাবো, না পাবো তার কোনো নিশ্চয়তা এখানে নেই।
কাল বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাঠানো সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা (ভ্যাকসিন) ২০ লাখ ডোজ ঢাকায় পৌঁছাবে। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে বেসরকারিভাবে সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউউট থেকে যে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন ক্রয় করছে তার দাম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন যেটা দিলে মানুষের জীবন রক্ষা হবে, মানুষ বাঁচবেÑ এটা নিয়েও তারা (সরকার) লুটপাট শুরু করেছে। অনেক বেশি দাম দিয়ে ভারতের কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন কিনছে। যার কোনো নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। ভারত থেকে টিকা এনে বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য গত আগস্ট মাসে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
কোভিড ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে সরকারের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এই করোনা কোভিড নিয়েও এরা চুরি করছে, ডাকাতি করছে, লুটপাট করছে। প্রথমদিকে করলো করোনা টেস্ট নিয়ে। ওই টেস্ট নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতাল, ডা. সাবরিনাসহ কে কে এলো... এসে তারা লুটপাট করলো।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে ওদের (আওয়ামী লীগ) সফলতা হচ্ছে যে, আজকে তারা জনগণের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা মানুষকে সত্যিকার অর্থে শৃঙ্খলিত করেছে, বন্দি করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে এই যে শৃঙ্খলিত অবস্থায় রাখা হয়েছে সে জন্য আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহবান থাকবে যে, আপনারা সবাই এখনো এই নিশ্চুপ না থেকে আসুনÑ আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং বাংলাদেশের জনগণকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করি। এই যে ভয়াবহ দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে, সেই দানবকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা আমরা প্রতিষ্ঠা করি।
বেগম খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনি আজকে বন্দি। কেন? তিনি গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছেন। কেন? তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ, সেই আদর্শকে বাস্তবায়িত করার জন্য, তাঁর ১৯ দফা কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান যিনি অল্প বয়সে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি মিথ্যা মামলায় কারা আক্রান্ত হয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন নির্বাসিত অবস্থায়। আজকে আমাদের ৩৫ লাখের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, ৫শর উপরে নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে, হাজার হাজার নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে অনুপ্রেরণা, তাঁর যে আদর্শ তা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারীর সহধর্মিণী বিথীকা বিনতে হোসেইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসীন আলী প্রমুখ।