চসিক নির্বাচন : ৪১০ ভোট কেন্দ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৮ এএম, ২১ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৩৮ এএম, ১০ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ মোগলটুলিতে নির্বাচনি সহিংসতায় একজনের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। সহিংসতাপ্রবণ এলাকার কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের দৃষ্টিতে ‘ঝুকিপূর্ণ’ নয় কিছু কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নগরীর চার প্রবেশ পথে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। পুলিশ কমিশনার নিজেই রাতে বের হয়ে থানা পুলিশের কার্যক্রম নজরদারি করছেন।
নির্বাচনে প্রায় ৫৭ শতাংশ কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নগরীতে ৪৫২ স্থানে ৭২৩ টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে নগরবাসী। নগরীর বাইরে হাটহাজারী থানা এলাকার ভোট গ্রহণ করা হবে সেই কেন্দ্রকেও ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে জেলা পুলিশ। আর নগরীর ৭২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১০টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ৩১৩টি ভোট কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে নগর পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রেখে নির্বাচন সম্পন্ন করতে নয় হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। এর বাইরে থাকবে আনসার বাহিনীর সদস্য। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে পুলিশ সদস্যরা আসবেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থাকে। তাদের অন্তত চার দিন অবস্থান করতে হবে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য রাখতে নগর পুলিশের চার জোনে সুবিধাজনক স্থানে চাহিদা অনুযায়ী কমিউনিটি সেন্টার নির্ধারণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (সিএমপি) সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোনো ভোট কেন্দ্রকে আমরা ‘ঝুকিপূর্ণ’ হিসেবে দেখছি না। তবে কিছু ভোট কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নগরীর ৭২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪১০টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ৩১৩টি কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের আরো এক সপ্তাহ বাকি। এর মধ্যে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্রের সংখ্যা পরিবর্তন হতে পারে।
সাধারণত ভোট কেন্দ্রের অবস্থান, কেন্দ্রের যোগাযোগ ব্যবস্থা, অতীতের নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা কিংবা সহিংসতা হয়েছে এমন ঘটনা, ভোটার সংখ্যা বেশি হলে, যারা নির্বাচন করছেন তাদের সম্পর্কে ধারণা, কেন্দ্রের আশপাশে প্রার্থীর বাড়ি থাকলে, বিচ্ছিন্ন একটিমাত্র ভোট কেন্দ্র হলে কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দ্বন্দ্ব রয়েছে এমন কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসাবে বিবেচনা করে থাকে পুলিশ।
পুলিশ কমিশনার তানভীর বলেন, আমাদের কাজ কথা বলবে। নির্বাচনে কাউকে বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না। বহিরাগত রোধে ইতিমধ্যে নগরীর চার প্রবেশমুখে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ‘সাধারণ’ কেন্দ্রের চেয়ে বেশি পুলিশ ও আনসার সদস্যের সংখ্যা যেমন বেশি থাকবে তেমনি নজরদারিও বেশি থাকবে।
১ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ১২টি কেন্দ্র হাটহাজারী থানা এলাকায়। ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন জেলা পুলিশ। জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক জানান, ‘পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কেন্দ্রের ভোটের দায়িত্ব পালন করবে জেলা পুলিশ। ওই কেন্দ্রটিকে আমরা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছি। সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে প্রসঙ্গে নগর পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) আবদুল ওয়ারিশ জানান, ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সবকিছুই করা হবে। কোনো ধরনের সহিংসতা কিংবা অঘটন ছাড়া সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন করতে আমাদের চেষ্টা থাকবে।