না’গঞ্জের ফতুুল্লায় আ’লীগ নেতার বেয়াই এর কান্ড : যুবকের হাত-পা বেধে নির্মম নির্যাতন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪০ পিএম, ২৭ জুন,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৪৯ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
নিজ কারখানার শ্রমিকের সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে নিজ বাসায় এক যুবক কে তুলে এনে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত-পা বেধে বন্দুকের বাট (কাঠের অংশ) দিয়ে নির্মম ভাবে পিটিয়ে আহত করেছে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামালের বেয়াই তৈয়ব আলী।
আহত যুবকের নাম শরীফ হোসেন (১৯)। সে ফতুল্লা মডেল থানার শিয়াচর লালখাঁ এলাকার বুলু মিয়ার ছেলে ও তক্কারমাঠ এলাকার পিন্টুর মালিকানাধীন হোসিয়ারী কারখানার শ্রমিক।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার (২৫জুন) রাত সাড়ে সাতটার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব শিয়াচর লালখাঁ এলাকায়।
পৈশাচিক এ ঘটনার পর আহত শরীফের পরিবার ভয়ে আতংকে রয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে ও ভয় পাচ্ছে পরিবারের সদস্যরা।
নির্যাতনের শিকার শরিফ হোসেনের মা জানান, তার ছেলের সাথে তার ছেলেরই এক বন্ধুর সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায় শরিফ তার বন্ধুকে একটি চড় মারে। ছেলের বন্ধু লালখাস্থ তৈয়ব ওরফে বরিশাইল্লা তৈয়বের মালিকানাধীন হৃদয় নামক একটি কারখানার শ্রমিক।
চড় মারার জের ধরে শনিবার রাতে তৈয়ব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ছেলে শীরফ হোসেন কে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে একটি ঘরে আটক করে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করে পিঠ সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটা রক্তাক্ত করা সহ গুরুতর নিলা ফুলা জখম করে।
তার আর্ত-চিৎকারে শরিফ হোসেনের পিতা বুলু মিয়াসহ আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে ক্রন্দনরতবস্থায় শরীফ হোসেনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান।
শরিফ হোসেনের বড় ভাই ফারুক জানায়, তার গরীব আর গরীবের কোন বিচার নাই। অপরদিকে তৈয়ব অর্থশালী, প্রভাবশালী। সমাজের সবাই তাকে সমীহ করে। আর তার বেয়াই হচ্ছে মোস্তফা কামাল। তিনি ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও থানা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি।
ভয়ার্ত ও আতংকগ্রস্থ হামলার শিকার শরীফ হোসেনের বড় ভাই ফারুক হোসেন বলেন, এ বিষয় নিয়ে লেখার ধরকার নাই। যদি আপনারা লেখা লেখি করেন তা হলে আমাদের গ্রাম ছাড়া হতে হবে।
তৈয়ব সহ তার লোক জন ইতিমধ্যেই আমাদের হুমকি দিয়েছে এ ঘটনা নিয়ে যেন কোন থানা পুলিশ না করি। থানা পুলিশ করলে বড় ধরনের ক্ষতি করবে তাই এ বিষয়ে কিছুই করবেনা তারা।
এ বিষয়য়ে তৈয়বের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন স্থানীয় একটি গ্রুপ বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেতা ইবু ছৈয়াল ও তার ভাই গাঁজা সেবী, মাদক ব্যবসায়ী ডালিম মিথ্যাচার করছে।
তার দাবী সে এলাকায় মাদক ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করে বলে তার বিরুদ্ধে এরা কাজ করে। তিনি আরো বলেন, লালখাঁ এলাকায় তার মালিকানাধীন কারখানায় আমির হোসেন আমু এসেছিলো। তিনি আমির হোসেন আমুর স্ত্রীর নামে গ্রামে কলেজ করে দিয়েছেন। আমির হোসেন আমুর হাত ধরে তিনি দশ বছর পূর্বে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ইনচার্জ শেখ রিজাউল হক দিপু জানান, এ বিষয়ে তার নিকট বা থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সে যেই হউক না কেনো, যতো প্রভাবশালী হউক না কেনো কোন প্রকার ছাড় পাবেনা।