খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জাতিকে লজ্জিত করেছে : ইউট্যাবের উদ্বেগ প্রকাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪১ এএম, ২০ মে,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৫৫ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
পদ্মাসেতুর শুরুর দিকের অর্থায়ন ও কাজ করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে পদ্মায় ফেলে দেয়া উচিত’ বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন তা আমাদেরকে মর্মাহত করেছে। দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য গোটা জাতিকে লজ্জিত ও হতবাক করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের অশ্রাব্য বক্তব্যে বহির্বিশ্বের বাংলাদেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হবে। এভাবে প্রতিহিংসার রাজনীতি চলতে থাকলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কী শিখবে? তারা কাদের কাছ থেকে শিখবে?
ইউট্যাবের নেতৃদ্বয় বলেন, এছাড়া শেখ হাসিনা আরো বলেছেন- ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের পেছনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা আছে। ফলে তাকেও পদ্মায় নিয়ে দুটি চুবানি দিয়ে উঠিয়ে নেয়া উচিত। মরে যাতে না যান, পদ্মায় একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেয়া উচিত। তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়’।
নেতৃদ্বয় বলেন, একটি দেশের সরকার প্রধানের মুখে যদি দেশের সম্মানিত ও আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত সিনিয়র নাগরিক সম্পর্কে এ ধরনের ঘৃণ্য মন্তব্য শোনে তাহলে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের মনে বিরুপ ধারণা তৈরি হবে। যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং বিব্রতকর।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে দুইজন ব্যক্তি নিয়ে বিরুপ ও অশালীন মন্তব্য করেছেন তারা উভয়েই স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের অবদানের জন্য স্বমহিমায় ভাস্বর। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক। যিনি বাংলাদেশের তিনবারের নির্বাচিত ও প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন। তার শাসনামলে বাংলাদেশের নারীর ব্যাপক ক্ষমতায়ন হয়েছে। নারীদের অবৈতনিক শিক্ষা সহ বিভিন্ন মহতী কর্মকা- আজো মাইলফলক। তার স্বামী রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক। তাকে নিয়ে শেখ হাসিনা যে অশালীন মন্তব্য করেছে তা নি:সন্দেহে আমাদের সবাইকে মর্মাহত ও ব্যথিত করেছে। অন্যদিকে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্ষুদ্র অর্থনীতিতে অনস্বীকার্য অবদান রেখেছেন। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে সুনামের সাথে তুলে ধরেছেন। বিশ্বের বহু দেশে তিনি আজো গর্বের সাথে চলাফেরা করেন। তাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সত্যিই বেদনাদায়ক। সুতরাং আমরা শিক্ষক সমাজের পক্ষে আহ্বান জানাব- রেষারেষি ও প্রতিহিংসার রাজনীতি বাদ দিয়ে উদার ও গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতি করুন। যাতে নতুন প্রজন্ম কিছু শিখে এবং দেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়।