প্রায় এক বছর পর ঈদের দিনে দলীয় চেয়ারপারসনের সাথে দেখা করেন স্থায়ী কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৪৩ পিএম, ৪ মে,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১২:০৮ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
প্রায় এক বছর পর ঈদের দিনে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন 'ফিরোজা'য় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সাত সদস্য।
সাক্ষাত শেষে 'ফিরোজা' থেকে বেরিয়ে এসে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, '' করোনাভাইরাসের প্রায় দুই বছর পরে আজকে আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এক সাথে ঈদের শুভেচছা জানাতে আমাদের চেয়ারপারসন এবং এদেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রিয় নেতা, গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতে এসেছিলাম। এই সাক্ষাত আমরা পূর্বেও করেছি যখন তিনি কারাগারে ছিলেন না, গৃহে অন্তরীন ছিলেননা। ওই সময় প্রতিবছরই আমরা ঘরের ভেতরে না, ঘরের বাইরে লনে বসে ঈদের দিনে আমরা সাক্ষাত করতাম, শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম।"
'' আমাদের এবারকার এই সাক্ষাত নিসন্দেহে খুব বেশি আনন্দময় ছিলো না। আনন্দময় যতটুকু ছিলো এজন্য যে, প্রায় বছর খানেক পর আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারলাম, তার কথা শুনতে পারলাম এবং আমাদের যে শুভেচ্ছা, তিনি যেন সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন এই প্রার্থনার কথা তাকে আমরা জানাতে পারলাম।সমস্ত দেশবাসী যে তার জন্য প্রার্থনা করছে সেই কথাটাও আমরা জানাতে পারলাম।"
তিনি বলেন, '' দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ আপনারা জানেন। এই অসুস্থতার মধ্যে তিনি পূর্বেও যেমন দেশবাসীর কথা চিন্তা করেছেন সবসময়। আজকে তিনি ঠিক এ্কইভাবে দেশবাসীর ও দেশের মানুষের অবস্থার কথা জানতে চেয়েছেন্ এবং বর্তমানে যে সামগ্রিক অবস্থা আছে এই অবস্থারে ব্যাপারে অবগত হয়েছেন আমাদের দ্বারা।"
'' সবসময় তিনি সেটা কাগজ-পত্রে পড়ছেন, নানা জায়গায় পড়েছেন। তারপরও তিনি আমাদের কাছ থেকে শুনেছেন এবং তার যে উদ্বেগ সেই উদ্বেগ তিনি প্রকাশ করেছেন।"
'দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা'
মির্জা ফখরুল বলেন, '' দেশনেত্রী বেগম খালেদা আপনাদেরকে এই কথা জানিয়েছেন যে, ঈদের শুভেচ্ছা তিনি আপনাদের মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীকে জানাতে চান। তার জন্যে দেশবাসীর কাছে দোয়া তিনি চে্য়েছেন এবং তিনি দেশবাসীর জন্য দোয়া করেছেন।"
'' এদেশের মানুষ যেন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে। গণতন্ত্রকে ফিরে পায়, মানুষ তার অধিকার ফিরে পায়- এই প্রার্থনা তিনিও করেছেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, '' তিনি(খালেদা জিয়া) এখনো সুস্থ নন। ডাক্তাররা আছেন তারা এই বিষয়ে বলতে পারবেন। এইটুকু আমি বলতে পারি যে, এখনো তিনি অত্যন্ত অসুস্থ আছেন। এখনো হেটে খাবার টেবিলে যেতেও তার খুব কষ্ট হয়। এটাই বাস্তবতা। তাহলেই আপনারা বুঝতে পারবেন তিনি কেমন আছেন।"
দলে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে কোনো বার্তা আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, '' তিনি এক্ই কথা বলেছেন, দেশের জন্য ভালোবাসা তারা যেন প্রবল করে এবং দেশকে তারা যেন মুক্ত করে।"
সন্ধ্যা ৮টায় মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান গুলশানের বাসা 'ফিরোজা'য় ঢোকেন। এক ঘন্টা তারা সেখানে ছিলেন। 'শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে' ফিরোজার দোতলায় দলীয় প্রধানের সাথে তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সর্বশেষ গত বছরের কোরবানির ঈদের দিন খালেদা জিয়ার দেখা পেয়েছিলেন এই নেতারা। গত রোজার ঈদের বিএনপি চেয়ারপারসন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দলের নেতাদের সাথে তার সাক্ষাত হয়নি।
দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্র্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয় বিএনপি প্রধানকে।
এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৬ বয়সী খালেদা জিয়া। যেখানে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থক কেউই নেত্রীর সাক্ষাত পান না।
এর আগে সকালে খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ নিকট স্বজনদের নিয়ে দুপুরে খালেদা জিয়া দুপুরের খাবার খান।