বিরোধী দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সরকার হটানোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে - ড. মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৬ এএম, ২৮ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩৭ এএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সরকার হটানোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ বুধবার রাজারবাগের হোয়াইট হাউজ রেস্টুরেন্টে নাগরিক ঐক্যের এক ইফতার-পূর্ব আলোচনা সভায় তিনি একথা জানান। বুধবার নাগরিক ঐক্যের আয়োজনে ‘এই সরকারের অধীনে নির্বাচনকে না বলুন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। এতে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। এর সাথে আমরাও একমত প্রকাশ করছি। এই কথার সাথে আরো যুক্ত করতে চাই আর এই সরকার নয়। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন তো না-ই। দেশের যে পরিস্থিতি যে অবস্থা তাতে এখন সময় এসেছে সরকারকে না বলা। এই সরকারকে বিদায় দেয়ার জন্য আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। দেশের মানুষের যে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা, দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং এদেশের মানুষের মালিকানা তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া- এর জন্য সকল গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি, দল ও ব্যক্তিকে আমরা আহবান জানাব এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে এদেশের জনগণকে মুক্ত করি। সে জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য যে কর্মসূচি প্রয়োজন হবে তা আলোচনার মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নেই।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল আওয়ামী লীগ তাকে হত্যা করেছে। আজকে ৫০ বছরেও দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয় নাই। একটা কথা পরিষ্কার আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি কেউ এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করব না- এই প্রশ্নে কোনো দ্বিমত নাই। আমাদের কথা স্পষ্ট এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সে জন্য এদের হটাতে আন্দোলনের কোনো বিকল্প পথ নাই। তবে এই সরকারকে বিদায়ের পর কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে সেটা আমাদের আগেই ঠিক করতে হবে। সেই সরকারটি অবশ্যই এমন সরকার হতে হবে যারা নিরপেক্ষ ও অবাধ একটি নির্বাচন করতে পারবে। সে জন্যই জেএসডি মনে করে একটি জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার যেভাবে প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে তাতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সে জন্য একটা জাতীয় সরকার দরকার হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা যারা কথা বলেছেন সবার কথার মধ্যে এই প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। আমরা যাবো না। এই সরকার চলে যাওয়ার পরে যে সরকার হবে সেটা তো নির্বাচিত সরকার নয়। এই সরকার কেমন হবে। কেউ জাতীয় সরকার বলছেন, কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলছেন, কেউ বলছেন তদারকির সরকার। এ থেকে সরকার পক্ষে মিডিয়াগুলো মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াবার চেষ্টা করছে- ওরা পরের সরকারের ব্যাপারে একমত নয়, মতপার্থক্য আছে, ওদের ঐক্য হবে না। তাদের জন্য আমরা একটা ম্যাসেজ দিতে চাই- আমরা যে নামেই ডাকি না কেন আমরা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাই, সেই সরকার পরবর্তী নির্বাচনকে সুগম, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণফোরামের ড. রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এলডিপি’র রেদোয়ান আহমেদ, শাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডি’র শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপি’র ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা’র খন্দকার লুৎফুর রহমান, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ইফতারে বিএনপির আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল মাহমুদ টুকু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামা ওবায়েদ, জহির উদ্দিন স্বপনসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।
তবে জামায়াতে ইসলামীর কাউকে এই ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।