ক্ষমতা দখলে রাখতে সরকার অনেক নৌকায় পা দিয়েছে-নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৩ এএম, ১৫ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:২২ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ক্ষমতা দখলে রাখতে সরকার ‘অনেক নৌকায় পা’ দিয়ে বসে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম খান।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সদ্য মরহুম ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী ও মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান এএইচএম কামারুজ্জামান খানের স্মরণে এই আলোচনা সভা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশ এক অদ্ভুত রাষ্ট্র, যে দেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ আছে, আবার ধর্মনিরপেক্ষতাও আছে। একই সংবিধানে গণতন্ত্রও আছে, সমাজতন্ত্রও আছে, একই সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তাবাদও আছে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদও আছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য সব ব্যাপারে কম্প্রমাইজ করা। বলে না যে, দুই নৌকায় পা দিলে ডুবে যেতে হয়। এই সরকার তো দুই নৌকায় নয়, অনেক নৌকায় পা দিয়ে বসে আছে আর কি। যেকোনো সময়ে পড়ে যাবে।
তিনি বলেন, একেবারে সাধারণ একটা প্রবাদ বলে যে, সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখতে নাই। অর্থাৎ বিকল্প রাখতে হয় সব ব্যাপারে। আমরা এই কোভিডে বিভিন্ন রকমের যে মাস্ক, পিপিই ইত্যাদি নিয়ে মানে কি নিয়ে কেলেংকারি হয় নাই বাংলাদেশে। দেখেন চাল, ডাল, তেল, নুনই বলেন, ভোটই বলেন, তারপরে দেশে বৈদেশিক নীতি বলেন, শাসনতন্ত্র বলেন কী নিয়ে হয় নাই। আমি খুব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মানুষের মধ্যে কষ্ট এতো বেশি, মানুষের প্রতিবাদ এতো সত্য হলেও এতো তীব্র যে, আন্দোলন অবশ্যসম্ভাবী। নিশ্চয়ই আন্দোলন হবে এবং সেই আন্দোলনের মুখে যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, যারা দুর্নীতি-অনাচার করে জনগণকে কষ্ট দিয়েছে তাদেরই পতন হবে।
আন্দোলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক বলেন, এজন্য আমাদের প্রস্তুতি লাগবে। ২০ দলে সেই নিয়ে আলোচনা হতে হবে। তার আগে আলোচনা হতে হবে আমি যখন অন্যের কথা বলব, তার আগে আমার নিজের কথা বলতে হবে আর কি। আমি নিজে আমার দায়িত্ব বা আমার ভূমিকা ঠিকমতো পালন করছি কিনা। আমরা যদি যার যার দায়িত্ব বা যার যার ভূমিকা ঠিক মতো পালন করি তাহলে আমাদের দায়িত্ব আর ভূমিকাও ঠিক মতো পালন হবে। আর যদি আমরা নিজেদের দায়িত্ব যার যার মতো না পালন করি তাহলে আমাদের দায়িত্বও ঠিক মতো পালন হবে না। আমি আশা করব যে, আগামী দিনে আমরা সবাই যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে যে নীতি ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে আমরা এই জোটটা গঠন করেছি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার, যেটা মূল কথা সেটার জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে একটাই- সেটা হলো মানসিক প্রস্তুতি নিন। জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণের দায়িত্ব আমাদের ওপর। আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, আমরা যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমরা যারা জনগণের যে ক্ষমতা, সেই ক্ষমতার প্রতি আস্থাশীল, আমরা যারা ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি আমাদেরই উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়া এবং এই লড়াইয়ে অংশ গ্রহণের জন্য জনগণ প্রস্তুত, তাদেরকে সাথে নিয়ে এই লড়াইয়ে বিজয় লাভ করা। বিজয় ইনশাল্লাহ সুনিশ্চিত। শুধু যদি আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারি। আর সেই দায়িত্ব পালনে ২০ দল অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করবে-আপনাদের এই আশ্বাস আমি দিচ্ছি। আলোচনা সভায় ২০ দলীয় জোট গঠনে প্রয়াত দুই নেতার অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন নজরুল।
২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে ও লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. গোলাম পারোয়ার, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, খেলাফত মজলিশের অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপির কারী আবু তাহের, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, মুসলিম লীগের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মুনির হোসেন কাশেমী, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, ইসলামী ঐক্যজোটের শওকত আমীন, ইসলামিক পার্টির আবুল কাসেম, এলডিপির এম এ বাশার, সাম্যবাদী দলের কাজী কামাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।