সংবাদ না করায় এক সংবাদকর্মীকে ছাত্রলীগের মারধর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৪ পিএম, ১৫ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৪৫ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ. এফ. রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামকে নিয়ে ‘ইতিবাচক’ সংবাদ না করায় এক সংবাদকর্মীকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে রিয়াজের অনুসারী এক ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে হল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
গতকাল বৃহস্পতিবার হলের ১১৫নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী ফারহান তানভীর নাসিফ ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে, ভুক্তভোগী আশিকুল হক রিফাত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী এবং অনলাইন পোর্টাল ‘দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসে’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
উল্লেখ্য, হলের কক্ষগুলো ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে থাকায় হলের শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের যেকোনও ‘গ্রুপে’র সাথে যুক্ত হয়েই হলে থাকতে হয়। অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী উভয়ই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি কক্ষে থাকেন।
অভিযোগকারী জানান, বুধবার এফআর হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুনের একটি লেখা অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়। মুনের লেখা প্রকাশ করায় সেটি নিয়ে আমাকে জেরা করে নাসিফ। সে বলে, ‘তুই রিয়াজুল ইসলাম ভাইয়ের (সভাপতি) গ্রুপে থাকিস আর নিউজ করিস, লেখা পাবলিশ করিস অন্য গ্রুপের নেতার (সাধারণ সম্পাদকের)। আর নিজের গ্রুপের নেতাদের কোনও নিউজ করিস না!’
এক পর্যায়ে সে বলে, ‘তুই যদি আমার জুনিয়র হইতি তাহলে তোরে লাত্থি মেরে হল থেকে বের করে দিতাম’। আমি এমন কথার প্রতিবাদ করায় নাসিফ আমার তলপেটে লাত্থি মারে। পরে বুকে আর মুখে উপর্যুপরি ঘুষি মারে।
রিফাত আরও বলেন, এর আগে গত ১১ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে অনশনরত মহিউদ্দিন রনির অনশন ভাঙাতে গিয়েছিলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সে সময় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ওই ঘটনার প্রতিবেদনে ‘কেন জয়ের নাম হাইলাইট করা হয়নি’ সেটি নিয়েও অভিযুক্ত নাসিফ আমার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছিল।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত নাসিফ বলেন, আমরা দু’জনই বন্ধু। আমাদের মধ্যে এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি।
হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামেরও দাবি, রিফাতের সঙ্গে ফারহানের তর্কাতর্কি হলেও কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন “রিফাত ও ফারহান- দুজনকেই ডেকে কথা বলেছি। আমি জানতে পেরেছি, তর্কাতর্কি হলেও রিফাতকে কোনও মারধর করা হয়নি। রিফাত ও ফারহানকে আমি মিলিয়ে দিয়েছি।”
বৃহস্পতিবার রাতে স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ কে এম সাইফুল ইসলাম খান প্রাধ্যক্ষ বলেন, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অবিলম্বে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।