দেশের মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে সরকার - সেলিমা রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৫ এএম, ১২ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:১৫ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, বর্তমান স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে দেশ বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে এবং বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে নিতে হলে সরকারের পতনের বিকল্প নেই। মানুষের আর্তনাদ তাদের কানে পৌঁছায় না। তারা মানুষের টাকা লুটে নিয়ে বিদেশে বেগম পাড়া বানাচ্ছে। আসলে তারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। এর কারণ হলো তার বাবাকে (বঙ্গবন্ধু) হত্যা করার পর দেশের মানুষ কেনো প্রতিবাদ করেনি? সেজন্য তখন থেকেই তাদের ক্ষোভ দেশের মানুষের ওপর। তারা ৯ বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। আসুন যার যার জায়গা থেকে আন্দোলন-সংগ্রামের প্রস্তুতি নিই। কে কি পেলাম, কি পেলাম না সেই চিন্তা ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “লাগামহীন দ্রব্যমূল্য ও দুর্নীতি : অসহায় জনগণ” শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে অন্তরে মম শহীদ জিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিমা রহমান বলেন, লাগামহীন দ্রব্যমূল্য, সরকারের দুর্নীতির কারণে অসহায় জনগণ। এই আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আসলে তারা তো দেশের স্বাধীনতা চায়নি। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধী। তারা হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে নির্যাতন করছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গুম ও খুনের শিকার। অনেকের নামে মিথ্যা মামলা। ৩৫ লাখ নেতাকর্মী আসামি।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কি কষ্টে আছে তা সবাই জানেন। আজকে দুইজন কৃষক আত্মহত্যা করেছে। তাদেরকে সার, সেচ ও অন্যান্য সেবা দেয়া হয়না। একজন রিকশাচালক আত্মহত্যা করেছে। কারণ তার রিকশা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজকে মধ্যবিত্ত সমাজ বলতে কিছু নেই। আজকে উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সমাজ তৈরি হয়েছে। ভালো চাকরিজীবী মানুষও টিসিবির ট্রাকের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে। অন্যদিকে সরকার উন্নয়নের নামে মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে লুটপাট করছে। ব্যাংক লুট হচ্ছে। মানুষের আয় কমেছে। সাধারণ মানুষ তাদের পরিবার গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে। সবদিক থেকেই এই সরকার মানুষকে নির্যাতন করছে।
সেলিমা রহমান বলেন, এই সরকার আমাদের তরুণ নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। তার সাথে পরিবারের লোকজনকে দেখা করতে দিচ্ছে না। তিনি তো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে লিফলেট বিতরণ করছিলেন। তার বাবা তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা। তাকেও গ্রেফতার করা হলো? এই সরকার সংবিধানের বাইরে সবকিছু করছে। তারা লুটপাট ও দুর্নীতি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পুষছে। আজকে দেশে মিথ্যাচার করে চলেছে এই সরকার। কিন্তু এভাবে বেশিদিন টিকে থাকা যাবে না। আমাদের সবাইকে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যাতে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন এবং দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান না হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসতো না। তিনি না হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আসতো না। তার নাম আরো বেশি করে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, সরকারের সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য লাগাহীন। তাদের দুর্নীতির কারণে জনগণ অসহায়। এই সরকার জনগণের সাথে প্রতারণা করছে। তাদেরকে আর বেশি সময় দেয়া যাবে না। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই ভোটারবিহীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলি। ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।