দুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে - নজরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৯ এএম, ১৫ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১১:০৯ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সরকারি দলের দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যাতে আন্দোলন করতে না পারে এজন্য বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। সরকারের দুর্নীতির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, সকল জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এর থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই প্রতিহত করার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। নজরুল বলেন, সকল জিনিসপত্রের দামের পিছনে একমাত্র দায়ী এই অবৈধ সরকার। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা দরকার। এদেশের মানুষকে বাকশাল থেকে মুক্ত করেছিলেন জিয়াউর রহমান সরকার। আজ গণতন্ত্র বন্দি। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করব। সেই লড়াইয়ে মহিলাদের অংশগ্রহণ করতে হবে। তিনি দেশের মানুষের সকল অধিকার নিন্ডিত করতে সকলকে লড়াইয়ে শামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সরকার অনেক কিছুই হত্যা করবে। এরা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতাকে হত্যা করেছে, গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকারগুলোকে হত্যা করেছে, এরা হত্যা ও রক্তক্ষরণ ছাড়া কিছুই করতে পারেনি। আর এইগুলো নিন্ডিত করার জন্যই গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে সেই অভিযোগপত্রের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নাই, কিছুই নাই। কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার করে সাজা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি অনেক উন্নয়ন করেছেন। আপনাদের ধরে নিতে হবে প্রধানমন্ত্রী যখন বলবেন তারপরেই দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাবে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ, এই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী। জনগণ খেতে না পেয়ে বাঁচল কিংবা মরল এর কোনো তোয়াক্কা করে না এরা। এরা সেই আওয়ামী লীগ যখন মানুষ খেতে না পেয়ে ফুটপাতে কাতরাচ্ছে, তখন তারা দ্রব্যমূল্য বাড়াবে এটাই তাদের ঐতিহ্য। ’৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় দেশের মানুষ যখন খেতে না পেয়ে মারা যাচ্ছিল, তখন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারে সোনার মুকুট পরে বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরব আমিরাতে গিয়েছিলেন, মানুষ অনেক কথা বলাবলি করছে, নানা কথা ভেসে আসছে হঠাৎ করে কেন তিনি গেলেন? যাওয়ার আগের দিন তার বেয়াইয়ের ভাইকে গ্রেফতার করলেন, জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব পরিমন্ডলের কাছে এটা কিসের বার্তা। মানুষ কিন্তু সব বোঝে, সব জানে, এই উন্নয়নের নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে, সেখান থেকেও রেহাই পাচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে নিজে গিয়ে সেটা সামাল দিতে হচ্ছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে। মহিলা দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজকের এই আন্দোলন মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন। তাই এই আন্দোলন আরও তীব্রতর করতে হবে। এই সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। জাতীয়তাবাদী মহিলা দল নারী নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় একটি দল। তাই তাদের নেতৃত্বে এই আন্দোলন সফল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
মহিলা দলের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে আফরোজা আব্বাস বলেন, বর্তমানে দেশে সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির পরে সরকারের মহল থেকে বলা হচ্ছে বিএনপি দ্রব্যমূল্য নিয়ে রাজনীতি করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি ও ভোট চুরির সরকার। স্বাধীনতার পর আওয়ামী সরকার যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই জনগণের ভোট থেকে শুরু করে সকল অধিকার হরণ করেছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করেন তিনি। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে কদম ফোয়ারার দিকে অগ্রসর হলে পুলিশি বাধার মুখে কর্মসূচি শেষ হয়। মহিলাদলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।