তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বুধবার বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২১ এএম, ১১ জানুয়ারী,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০১:২২ পিএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ‘ভুয়া-বানোয়াট-মিথ্যা’ রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামী ১৩ জানুয়ারি বুধবার সারাদেশে জেলা ও মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ-মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এ ছাড়াও ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ সেই ভয়ংকর কালো দিনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই ষড়যন্ত্রের দিনে আওয়ামী লীগের কলংকিত রাজনীতির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে ১১ জানুয়ারি সোমবার বিকাল ৩টা কেন্দ্রীয় ভার্চুয়াল আলোচনা সভা করবে।
আজ রবিবার সকালে দলের এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আালমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটর সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরে নিম্নে বর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ২ জানুয়ারি ২০২১ সালে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তার অনুপস্থিতিতে চার্জ গঠন ও ওয়ারেন্ট জারির তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয়। শুধু মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ১/১১-এর মইনদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের অবৈধ সরকারের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার লক্ষ্যে যেভাবে গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা, বানোয়াট মামলায় কারারুদ্ধ করেছে একইভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর শারীরিক নির্যাতন করে নির্বাসিত করেছে এবং অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার এবং বিএনপিকে নেতৃত্ব শূন্য করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ভুয়া বানোয়াট মিথ্যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে চার্জগঠন ও ওয়ারেন্ট জারি সম্পূর্ণভাবে আইনের পরিপন্থি দখলদার সরকারের বাকশালী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।
এই হীন অপচেষ্টার প্রতিবাদে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের চার্জগঠন ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামী ১৩ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার সারাদেশে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অথবা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে।
৩। সভায় ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের লক্ষ্যে সংবিধানসম্মত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উৎখাত করে বেআইনি সেনা সমর্থিত সরকার গঠন করা হয়। দেশের জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বহুসংখ্যক রাজনৈতিক নেতাকে মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করা হয়। মূল লক্ষ্য ছিলো দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করা। ১/১১-এর বেআইনি সরকার পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙ্গে দিয়ে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা প্রদানের নীল নকশা বাস্তবায়ন করে। আজকের অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার তারই ধারাবাহিকতায় এদেশের মানুষের আকাক্সিক্ষত গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। বিনা নির্বাচনে পার্লামেন্ট, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। মানবাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ভূলুণ্ঠিত। দুর্নীতি ও সন্ত্রাস চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েেেছ। ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ সেই ভয়ংকর কালো দিনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই ষড়যন্ত্রের দিনে আওয়ামী লীগের কলংকিত রাজনীতির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে ১১ জানুয়ারি সোমবার বিকাল ৩টা কেন্দ্রীয় ভার্চুয়াল আলোচনা সভা করবে।
৪। সভায় কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের টিকা আমদানির দায়িত্ব শেয়ার বাজার লুণ্ঠনকারী বিতর্কিত বেক্সিমকো গ্রুপকে প্রদানের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে মানুষের জীবন রক্ষাকারী এই টিকা আমদানির প্রক্রিয়ায় অস্পষ্টতা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির ফলে জনগণের এই টিকা প্রাপ্তি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সরকারের লাভজনক পদে নিয়োগকৃত কোনো ব্যক্তির যিনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা তার এই সম্পৃক্ততা বেআইনি এবং অপরাধমূলক। ভারতীয় হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। ভ্যাকসিন প্রাপ্তিকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে গেছে। এর পরেও সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য জনগণের কাছে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
৫। আগামী ১৯ জানুয়ারি স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশর রূপকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৮৫তম জন্মদিন। মহান নেতার জন্ম বার্ষিকী বিএনপি ও সকল অংগ-সংগঠন সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করবে।
৬। সভা শেষে সভাপতি উপস্থিত সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভা মুলতবী ঘোষণা করেন।