দুর্নীতি করে সরকার দেশকে ‘ফোকলা’ করে দিয়েছে - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৮ এএম, ৫ মার্চ,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:০৭ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দুর্নীতি করে সরকার দেশকে ‘ফোকলা’ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার রাজধানীতে এক সমাবেশে তিনি এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার মিথ্যা কথা বলে, মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজেদের যে দুর্নীতি, নিজেরা যে চুরি করছে, নিজেরা আজকে চুরি করে বাংলাদেশকে ফোকলা বানিয়ে দিয়েছে- সেটা আড়াল করতে চায়, ঢাকতে চায়। তারা মিথ্যাচারের কৌশল নিয়েছে। যত কিছ্ইু করেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে তাকে আটকিয়ে রাখা যাবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এভাবে টিকে থাকা যাবে না। মিথ্যা কথা বলে, জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, প্রতারণা করে টিকে থাকা যাবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অনেক এগিয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া আছে না আপনাদের, সারাক্ষণ ফেসবুক করেন। ওখানে কী কথা ভেসে আসে? ভেসে আসে যে, এদের বড় বড় নেতারা একদম উপর থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত কিভাবে দুর্নীতি করছে তা আপনারা দেখতে পারছেন। যদি ভালোয় ভালোয় বিদায় নিতে চান তবে দুর্নীতি বন্ধ করেন। তা না হলে আপনাদের পিঠের চামড়া এদেশে থাকবে না। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশ হয়। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, কথা খুব পরিষ্কার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, মজনু (রফিকুল আলম মজনু)সহ সকল রাজবন্দিকে মুক্ত করতে হবে। তাদের মুক্ত করতে হলে আমাদের আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই। ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে যারা আমাদের সব অর্জনকে কেড়ে নিয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো কেড়ে নিয়েছে, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের অর্জনগুলো কেড়ে নিয়েছে তাদেরকে পরাজিত করতে হবে। তাদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে এই সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে এবং একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা- সেটাই একমাত্র তাদের রক্ষার উপায়, এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ‘সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অনর্গল ওরা (সরকার) মিথ্যা কথা বলে। তারেক রহমান সম্পর্কে ইদানীং শুরু করেছে। তার জন্য নাকি টাটা (ভারতের টাটা কোম্পানি) তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আসে নাই। আচ্ছা একটা পাগল যে, সেও তো বুঝবে সরকারে ছিলো তখন বিএনপি। তো বিএনপি বিনিয়োগ আনতে চাইবে না কেন? আমি বলেছিলাম ফোনালাপ যেটা বের হয়ে এসেছে- আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বিনিয়োগ উপদেষ্টার, সেই ফোনালাপে জয়ের (প্রধানমন্ত্রীর ছেলে) কথা বলা হয়েছে, জয়ের একটা প্রজেক্টের ব্যাপারে ওই মন্ত্রী-উপদেষ্টা কথা বলেছেন। আমরা বলেছিলাম, জনগণ জানতে চায় ওই প্রজেক্টটা কী, এখানে দুর্নীতির আভাস আছে... ওরা (সরকার) সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ‘বাংলাদেশের মানুষ অনেক এগিয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ফেসবুকে কী কথা ভেসে আছে? ভেসে আসে সরকারের এতো বড় নেতারা একদম উপর থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত কিভাবে দুর্নীতি করছে সেগুলো আপনারা দেখতে পারছেন।’ বলেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধবগতির মানুষের ক্ষতি হচ্ছে, মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, তারা কষ্ট পাচ্ছে। আজকে পত্রিকায় দেখলাম-এক মন্ত্রী বলেছেন, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। দ্রব্যমূল বৃদ্ধি আর ক্রয়ক্ষমতা এক জিনিস নয়। মন্ত্রী সাহেব আপনাকে প্রথমে শিখতে হবে-দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি আর ক্রয়ক্ষমতা এককথা নয়। আর যদি ক্রয়ক্ষমতা বেড়েই থাকে সেই ক্ষমতা বেড়েছে আওয়ামী চামচাদের, সাধারণ মানুষের নয়। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে আন্দোলন দমানো যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও মহানগর দক্ষিণের ইউনুস মৃধা ও লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিমসহ মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।