খুলনায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে আমির খসরু
ভোট চোরদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৯ এএম, ১ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০১ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
খুলনায় বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে সহযোগী চোর আখ্যয়িত করে তিনি বলেন, আসল চোরকে ধরতে হবে, যারা জনগনের ভোট চুরি করে ক্ষমতা দখল করেছে। জাতীয় ঐক্য গড়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, এমন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যেন চোরেরা পালাতে বাধ্য হয়। আমরা ভোটের মাঠে আছি, চোরের মাঠে নাই।
এ সময় তিনি স্লোগান তোলেন, হাসিনার বদলে কেয়ারটেকার, ইভিএম’র বদলে ব্যালট পেপার।
আজ সোমবার বিকেলে খুলনায় মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন। চাল, ডাল, তেল, গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত বিভাগীয় সদরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। নগরীর কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভাকেট শফিকুল আলম মনা।
অবৈধ, অনির্বাচিত, দখলদার সরকারের দুর্নীতির কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলে অভিযোগ করেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। জনগনের কাছে তাদের জবাবদিহিতা নেই, দায়বদ্ধতা নেই বলেই দফায় দফায় পানি, তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, এই দখলব্জা সরকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া জনগণের হারানো অধিকার সমূহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবেনা। আর তাই ফ্যাসিষ্ট অপশক্তিকে হঠাতে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ করে চূড়ান্ত আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান তিনি।
আমির খসরু বলেন, দুর্নীতি আর লুটপাটের বদৌলতে সরকার ও তার অনুসারীরা ফুলেফেপে বড়লোক হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রতিনিয়ত কমছে। নূন্যতম পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহ করতে পারছেনা অধিকাংশ পরিবার। সরকার যখন মধ্যম আয়ের দেশের মিথ্যা দাবি তুলছে, সেই সময় একটি প্রজন্ম বেড়ে উঠছে প্রয়োজনীয় পুষ্টিচাহিদা পূরণ না করে। তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সরকার জনগণের পকেট কাটছে, আর সরকারি সিন্ডিকেট মুনাফা লুটে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে জনজীবনে নাভিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। কিন্ত জনদূর্ভোগ লাঘবে সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই। কারণ তারা জনগনের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তারা অবৈধ ভাবে দখলদারির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম, যুবদল নির্বাহি সংসদের সিনিয়র সহ সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ইঞ্জিনিয়ার টি এস আইয়ুব, রবিউল ইসলাম রবি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ও খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আলহাজ রকিবুল ইসলাম বকুল।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, জেলা সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো: তারিকুল ইসলাম জহীর, জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু।
অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহিলা দল জেলা সভানেত্রী অ্যাডভোকেট তছলিমা খাতুন ছন্দা, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা সভাপতি তৈয়েবুর রহমান, যুবদলের মহানগর সভাপতি মাহবুব হাসান পিয়ারু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর সভাপতি একরামুল হক হেলাল, যুবদলের জেলা সভাপতি শামীম কবির, শ্রমিক দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান, ছাত্রদলের জেলা সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ওলামা দলের জেলা সভাপতি মাওলানা ফারুক হোসাইন।
দুপুরের পর থেকেই বিশাল বিশাল মিছিল আসতে থাকে সমাবেস্থলের দিকে। স্বল্প সময়ের মধ্যে কানায় কানায় ভরে যায় কর্মসূচিস্থল। কে ডি ঘোষ রোড ছাড়াও আশেপাশের রাস্তায় বিপুল সংখ্যক মানুষ দাঁড়িয়ে বক্তব্য শোনেন। এ সময় সেখানে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।