ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির ভাইয়ের নির্দেশে চাদাবাজীর অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৬ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:২৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবসার ৫০ শতাংশ ভাগ না দেওয়ায় স্থানীয় একটি ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ভাঙচুর করে মালামাল লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বটতলা বাজারের একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ওই প্রতিষ্ঠানের নাম উৎসব স্যাটেলাইট। প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় আমবাগান, গেরুয়া, ইসলামনগর ও বটতলা এলাকার ১৮৮টি বাসায় ইন্টারনেট ও ৩৩৭ বাসায় ডিসলাইনের সেবা দেয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাতটি মোটরসাইকেলে করে ফারসাদ হোসেন, সাজ্জাদুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৪-১৫ জন নেতা–কর্মী বটতলা বাজারে যান। তাঁরা উৎসব স্যাটেলাইটের কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। পরে সেখানে ডিশ ও ইন্টারনেট সংযোগের জন্য রাখা সব যন্ত্রপাতি লুটপাট করেন।
এ সময় স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাঁদের বাধা দিলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক আল-আমিন তাঁদের কাছে এসব যন্ত্রপাতি বিক্রি করেছেন। পরে রিকশায় করে যন্ত্রপাতিগুলো নিয়ে যান তাঁরা।
উৎসব স্যাটেলাইটের মালিকদের একজন মো. আল-আমিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা জেলা উত্তরের সহ সভাপতি জাহিদুল হক ওরফে সময় এবং স্থানীয় ছাত্রলীগের এক নেতা আমার কাছ থেকে ইন্টারনেট ব্যবসার ৪০ শতাংশ ভাগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খানের ছোট ভাই আরমান খানের নাম বলে এই দাবি জানান। কিন্তু আমি ভাগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিভিন্ন সময় আমার বাড়িতে এসে আমাকে তুলে দেওয়ার হুমকি দেন।’
আল–আমিন বলেন, ‘এসব ঘটনার পর ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হুট করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অভিযুক্ত এহসানুল হক, মেহেদী জয়সহ কয়েকজন নেতা–কর্মী আমার প্রতিষ্ঠানে আসে। বটতলা বাজারের পাশে ডিশের লাইনের সার্ভার কক্ষ থেকে সব যন্ত্রপাতি রিকশা করে নিয়ে যান তাঁরা। যাওয়ার সময় বলে যান যদি আগের কথা অনুযায়ী ব্যবসার ভাগ না দিই, তাহলে আমাকে ও আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে দুনিয়া থেকে তুলে দেবে।’
আল–আমিনের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা এসে নিজেদের আরমান খানের লোক উল্লেখ করে যন্ত্রপাতিগুলো নিয়ে যান। যাওয়ার সময় বারবার আমাকে হুমকি দেন, কথা অনুযায়ী কাজ না হলে আমার স্বামীকে দুনিয়া থেকে তুলে দেবেন তাঁরা।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের ঢাকা জেলা উত্তরের সহসভাপতি জাহিদুল হক বলেন, ‘আল–আমিনের যে ইন্টারনেটের ব্যবসা, তা মাওলানা ভাসানী হলের লোকজনের নামে করা। এটা নিয়ে তাঁদের মধ্যে কী আছে, তাঁরাই জানে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক আগে আল–আমিন আমার এক বড় ভাইকে ব্যবসার বিষয়ে হুমকি দিয়েছিল। এ বিষয়ে তার সঙ্গে আমার ১৫-২০ মিনিট কথা হয়েছে। আর কিছু না।’
সাজ্জাদুল ইসলাম, এহসানুল হক ও মেহেদী জয়ের সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে কথা হয়। তাঁরা সবাই বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা করেছেন বলে আমার জানা নেই। খোঁজখবরে নিচ্ছি, দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’