দেশকে লুট করে যারা নিঃস্ব করেছে তাদের বিচার করা হবে : মান্না
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৭ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৪৪ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নির্বাচনের আগে সরকার ও প্রশাসনে দায়িত্বরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বদলানোর দাবি জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলা শাখার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আব্দুস সালাম’র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার তিন মাস ক্ষমতায় থাকবে, তারপর তারা নির্বাচন দেবে। সারাদেশে এই সরকারের ওসি, এসপি, ডিসিরা যে অত্যাচার নির্যাতন করেছে-ওরাই আবার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করবে? না। ওদেরও বদলানো হবে। তিন মাসে প্রশাসনও বদলাবে। সচিবালয়ে যারা আছে, তাদের বদলাতে হবে। সারাদেশ থেকে লুট করে বাংলাদেশকে যারা নিঃস্ব করে ফেলেছে তাদের বিচার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, “আওয়ামী লীগ এত বড় সংগঠন, নতুন সরকার গড়লে আওয়ামী লীগকে রাখবেন না?” আমি বলি আওয়ামী লীগ নয়; আওয়ামী লীগের কিছুই ওই সরকারে থাকতে পারবে না। আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো দলের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো রাগ নেই। কিন্তু যে চোর, তার চুরির বিচার হবে না? যে অন্যায়ভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে, গুম করেছে, খুন করেছে তাদের বিচার হবে না? তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য এই আন্দোলন করছি না।’
মান্না বলেন, মানুষ রাজপথে নেমেছে। ওমিক্রন বিধি-নিধিষের আগে বিএনপি রাজপথে নেমেছিল। হাজার হাজার মানুষ যখন জনসভায় যোগ দিচ্ছিল এবং কোথাও কোথাও ১৪৪ ধারা জারি করলেও তা ভেঙ্গে সভা হয়েছে। এখন বিধিনিষেধ নাই। তারপরে আমরা রাজপথে আসছি। এই বার ১৪৪ ধারা দেন, আমরাও ভেঙ্গে ফেলে দেখিয়ে দিবো। কোনো বিধিনিষেধের সামনে মাথানত করবো না।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কেরাণীগঞ্জের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষ দল নয়। বরং আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নির্যাতন করে। সরকারকে বলবো, হামলা মামলা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বা নিপুণ রায়দের দমন করা যাবে না।
খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, ‘কারা খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর মুখেও বিদেশে চিকিৎসা করতে দিলো না? ওরা এমনি এমনি পার পেয়ে যাবে? না। কারা খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখার রায় দিয়েছে? তাদের ছেড়ে দেব? এই আন্দোলন কেবল আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন নয়; আমরা দেশটার ভালো করতে চাই। দেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দেখেন দুদকের একজন কর্মকর্তা যিনি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মামলা দিয়েছে সেই কর্মকতাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এই দুদক কর্মকর্তার পক্ষে সরকার কেন কোনো কথা বলছে না? কারণ, এই সরকার দুর্নীতি করে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। আজ এর পক্ষে বলবে, কাল ওর বিপক্ষে বলবে। চট্টগ্রামে চীন নাকি একটি শহর বানিয়ে দেবে। আমার একটাই বক্তব্য আমার দেশের জমি কাউকে দেওয়া যাবে না। এই সরকার নানাভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। এদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’
দেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মান্না বলেন, ‘আপনারা আন্দোলনের জন্য তৈরি হোন, ঐক্যবদ্ধ হোন। সামনে স্বাধীনতার মাস, এই মাসে আমাদেরকে লড়াই করতে হবে। যেন স্বৈরাচারকে হটিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’
নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও বিএনপির যুববিষয়ক সহ সম্পাদক নেওয়াজ আলী নেওয়াজের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, সাইফুল আলম নিরব, ডা. রফিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম খান রবি, মশিউর রহমান বিপ্লব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম।
এতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।