গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সরকার বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলা হবে : নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০২ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৫৮ এএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ‘সরকার বিরোধী ঐক্য’ গড়ে তোলা হবে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমরা সবাই মিলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারব ইনশাআল্লাহ।’ বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে পেরেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে পেরেছি, এবার আমাদের ভাই তারেক রহমানের নেতৃত্বেও পারব ইনশাআল্লাহ।’
আজ সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি ১৯৮৩ সালে স্বৈরাচার প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের যৌথ উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাতার জন্য তারাই আমাদের সাথী হবে যারা গণতন্ত্র চায়, যারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা চায়। যারা সরকারের সুবিধাভোগী হয়ে কিছু ব্যক্তিগত লাভের জন্য চিন্তা করে না- তেমন মানুষ যারা, তেমন সংগঠন যারা, তেমন দল যারা, যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে, যারা গণতন্ত্র পছন্দ করে, যারা উন্নয়ন চায় সবার জন্য তাদের সবার সাথে আমাদের ঐক্য হবে। তাদের সবাইকে নিয়ে আমরা একসাথে লড়াই করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সেই বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে জনগনের উন্নয়ন, কতিপয় ব্যক্তির নয়, কতিপয় গোষ্ঠীর নয়। আমরা সেই বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে, যেখানে মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার থাকবে, মানুষের নির্বিঘ্নে ভোট দেয়ার অধিকার থাকবে- সেই বাংলাদেশ আমরা ফেরত চাই।’
‘তবে সেই বাংলাদেশ ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন-নিবেদন করলে হবে না, লড়াই করতে হবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে আমাদের এই দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা সেটা বাস্তবায়ন করব। মহান ভাষা আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাব, এই ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ সালে জীবন দিয়েছেন আমরা তাদের রক্তের ঋণ শোধ করব এই লড়াইয়ের মাধ্যমে। আসুন আগামী দিনে সেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্ততি নেই,’ বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লড়াইয়ের ময়দানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজকে তিনি একটা রাজনীতির প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাগারে আবদ্ধ, দারুণভাবে অসুস্থ।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়ার আদর্শ, আমাদের প্রতি তার স্নেহ এবং বিভিন্ন সময়ে যে দায়বোধ প্রমাণ করেছেন তার প্রতিদান দেয়ার সময় এসেছে। আমাদের ভাই তারেক রহমান অন্যায়ভাবে সরকারি রোষের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের নেতা শহীদ জিয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে যে স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি অকালে জীবন দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ সরকার একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ড. মজিদ খানের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করার কর্মসূচি গ্রহণ করে। প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালায় এবং জয়নাল, জাফর, কাঞ্চন, দিপালী সাহা, মোজাম্মেল, আইয়ুবসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়। তখন থেকে এই দিনটিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করছে বিএনপি।
নব্বইয়ের ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং তৎকালীন ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, এম এ জলিল, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, জহির উদ্দিন স্বপন, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুতফর রহমান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আসাদুর রহমান খান, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, শহীদুল ইসলাম বাবুল ও ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।