অন্যের জমি দখল করে আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৫ এএম, ২৭ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৫০ এএম, ১৩ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মঞ্জুর কাদের নামের এক ব্যক্তির ৩ শতক জমি দখল করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
আজ বুধবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবে মঞ্জুর কাদের ও তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মঞ্জুর কাদের বলেন, মহাদেবপুর উপজেলার সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুলবুল সিনেমা হলের কাছে নওগাঁ-নজিপুর মহাসড়কের পাশে মঞ্জুর কাদের ও তার ছোট ভাই রেজাউল পৈতৃক সূত্রে ৩ শতক মালিক হন। পরে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ওই জমি ছোট ভাইয়ের অংশ বিনিময় করে নিলে ৩ শতক জমি তিনি ২৫-৩০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ২০১২ সালে স্থানীয় আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি ওই জমির জাল-জালিয়াতি করে আমমোক্তারনামা করে নেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মঞ্জুর কাদের আরও বলেন, আফজাল হোসেনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে তিনি বাদী হয়ে নওগাঁ জজ কোর্টে একটি মামলা করেন। মামলাটি এখনো চলমান এবং আদালতের নির্দেশে ওই জমি তিনি ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু গত শুক্রবার হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা বাবু ঘোষ ও সাঈদ হাসান তরফদার লোকজন নিয়ে জোর করে তার জায়গায় নির্মিত টিনশেডের দোকানঘর ও ভাড়াটে উচ্ছেদ করে জমিটি দখল করে নেন। স্থানীয় সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদারের সহযোগিতায় ওই জমি দখল করে সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে নানা ধরনের টালবাহানা করছে।
মঞ্জুর কাদেরের মামলা না নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন আহমেদ বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখল করে নিয়েছেন এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে থানায় কেউ আসেনি। অভিযোগ সঠিক হলে মামলা না নেয়ার কোনো কারণ নেই। ভুক্তভোগী ওই পরিবার লিখিত অভিযোগ করলে এবং অভিযোগের সত্যতা থাকলে অবশ্যই মামলা নেয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মঞ্জুর কাদেরের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছি। ওই জমিতে থাকা দোকানঘর ভাড়া দিয়ে আমার চিকিৎসা ও সংসার চলে। এখন ওই জায়গা চলে গেলে আমাদের বাঁচার কোনো পথ থাকবে না। জমিটি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মহাদেবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাবু ঘোষ বলেন, যে জমি নিয়ে বিতর্ক উঠেছে, সেটি উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে কেনা। মঞ্জুর কাদের জমিটি আফজাল নামের এক ব্যক্তিকে আমমোক্তারনামা করে দেন। আফজাল আমমোক্তারনামার বলে জমিটি তার স্ত্রী সালমা আক্তারকে লিখে দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সালমা আক্তারের কাছ থেকে জমিটি কিনেছেন। বৈধ কাগজপত্রের ভিত্তিতেই জমিটি দখলে নেয়া হয়েছে। সালমা আক্তারের জমিটি বুঝে নেয়ার দিন উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অনেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছি) আসনের সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার মুঠোফোনে বলেন, দখল করার যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। বৈধ কাগজপত্রের ভিত্তিতে জমিটি উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে কেনা হয়েছে। ওই স্থানে উপজেলা আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস হবে।