খুলনায় শহীদ জিয়ার জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় কবি আবদুল হাই শিকদার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৩ এএম, ২০ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৩৫ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
৭ নভেম্বরের পরাজিত শত্রুরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছে দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, বিশিষ্ট কবি, সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, গণঅভ্যূত্থান ঘটিয়ে এই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে হবে। জিয়াউর রহমানের ইমেজের কাছে পরাস্থ গোষ্ঠী তাকে নিয়ে কুৎসিত, জঘণ্য, মিথ্যাচারে জড়িত অভিযোগ করে পাড়ায় মহল্লায় জিয়া বিদ্বেষীদের তালিকা তৈরির আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই এদের কাজের উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মীদেরকে কোন দলের কর্মীর মতো আচরণ না করে ন্যায়ানুগন আচরণ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সংশোধন হন, নতুবা সমুহ বিপদ আছে।
স্বাধীনতার মহান ঘোষক, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, উন্নয়ন ও উতপাদনের রাজনীতির সূচনাকারী এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৮৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনায় বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দেশের খ্যাতনামা কবি সাহিত্যিক আবদুল হাই শিকদার এসব কথা বলেন।
আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ আয়োজনে এ কর্মসুচি পালিত হয়।
আবদুল হাই শিকদার বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ এবং রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান এক ও অভিন্ন স্বত্তা। পৃথিবীর বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়কদের শাসন ব্যবস্থার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এক জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে যে অবদান রেখেছেন এবং পরবর্তীতে স্বতন্ত্র বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পরিচয় দান করেছেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের পর্বত সমান ইমেজের সামনে আর কারও ইমেজ দাঁড়াতে পারেনা। একজন যখন সুটকেস গুছিয়ে পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পনের জন্য প্রস্তত, সেই সময় জিয়াউর রহমান উই রিভলট ঘোষণা দিয়ে জাতিকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করলেন। আওয়ামী লীগের যেখানে ব্যর্থতা সেখানেই জিয়ার সফলতা। এই জন্য এই কুখ্যাত শাসক গোষ্ঠী সর্বশক্তি নিয়ে জিয়ার ইমেজকে কালিমালিপ্ত করতে ঝাপিয়ে পড়েছে।
আবদুল হাই শিকদার বলেন, শেখ মুজিব হত্যায় যারা জড়িত, তাকে হত্যার পরে যারা মন্ত্রী এমপি হয়েছেন, সংসদে যারা ইনডেমনিটি বিল পাশ করেছেন, যারা বলেছেন বাংলাদেশে ফেরাউনের পতন হয়েছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, রক্ষীবাহিনী সব বাহিনী ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। যেখানে জিয়ার কোন ভূমিকা নেই। অথচ আজ সব দায় তার কাঁধে চাপানো হচ্ছে। এই সরকার জিয়াতংকে ভুগছে।
কবি শিকদার বলেন, দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের জন্মদিনকে আমাদের উৎসবের দিন আনন্দের দিন হিসেবে পালনের কথা ছিল। কিন্ত আজ গণতন্ত্রের সংগ্রামের আপোসহীন নেত্রী আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি কারাবন্দী। গণঅভ্যূত্থান ঘটিয়ে অসুস্থ মাকে কারামুক্ত করতে হবে। তারেক রহমান হবেন আগামীর বাংলাদেশের লেলিন অথবা আহমদ শাহ পাহলভী। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিকেল ৩টায় কর্মসুচির শুরু হলেও বহু আগে থেকেই মহানগর ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক মিছিল এসে সভাস্থলে এসে পৌছাতে থাকে। নির্ধারিত সময়ের বহু আগেই অডিটোরিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে সামনের চত্বর ও রাস্তায় জনতার ঢল পৌছে যায়। মাগরেবের বহু সময় পরেও হাজার খানেক শ্রোতা পিনপতন নীরবতায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শোনেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা। প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শেখ মুজিবুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. গাজী আব্দুল বারী, বিএফইউজের সাবেক সহ সভাপতি অ্যাড. ড. জাকির হোসেন, বারের সাবেক সভাপতি অ্যাড. এস আর ফারুক, বারের সাবেক সভাপতি অ্যাড. নুরুল হাসান রুবা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজের সহ সভাপতি মো: রাশিদুল ইসলাম ও শিক্ষক সমিতির নেতা অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল।
সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ওলামা দল সভাপতি মাওলানা ফারুক হোসাইন। এর আগে সকালে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।