সাংবাদিক মনিরের পাশে দৈনিক দিনকালের প্রকাশক তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৫ পিএম, ১৫ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩২ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা লাকসামের "দৈনিক দিনকাল" প্রতিনিধি, পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সাংবাদিক মনির আহমেদের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দৈনিক দিনকালের প্রকাশক তারেক রহমান। তার নির্দেশে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক, লাকসাম-মনোহরগঞ্জ বিএনপির অভিভাবক, দেশের খ্যতনামা শিল্পপতি মো. আবুল কালাম। দৈনিক দিনকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সামশুর রহমান শিমুল বিশ্বাস এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও ড্যাবের তত্বাবধানে রাজধানী ঢাকার একটি বিশেষায়িত হসপিটালে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই মনিরের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১১ নভেম্বর আছরের নামাজ পড়ার পর হঠাৎ নিজ বসত ঘরে মাথাঘুরে পড়ে যান মনির। এরপর এম্বুলেন্সযোগে মনিরকে প্রথমে স্থানীয় মমতাময়ী হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ওই হাসপাতালের পরিচালক ডা. রিয়াজের পরামর্শে তাঁকে কুমিল্লা জেলা সদরে অবস্থিত গোমতী হাসপাতালের চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের নিউরোলজী বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান স্নায়ুরোগ (ব্রেইন) মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল হাসান চৌধুরীর তত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু করা হয়। ওইদিন (১১ নভেম্বর) সন্ধার পর থেকে রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত এমআরআই, সিটিস্কেন, ইসিজি, ইকো সহ মনিরের প্রায় ১৮ টি পরীক্ষা করা হয়। তবে তার কোন রিপোর্টই সন্তোষজনক নয়। মনিরের শরীরের নিম্নাংশ, পিঠ এবং ঘাড় সম্পুর্ন প্যারালাইজড হয়ে যায়। কথাবার্তাও অস্পষ্ট হয়ে যায়।
এমতাবস্থায় ডা. নাজমুল হাসান চৌধুরী দ্রুততম সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য মনিরকে রাজধানী ঢাকার শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত নিউরাসায়েন্সেস হসপিটাল এন্ড ইউনিষ্টিটিউটে রেফার্ড করেন। সেখানে ৫ দিন চিকিৎসা শেষে ওই প্রতিষ্ঠানের ডিপার্টমেন্ট অফ ক্লিনিকাল নিউরোসার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জয়নুল ইসলাম অপারেশনের মাধ্যমে মনিরের ঘাঁড় থেকে মেরুদন্ড পর্যন্ত থাকা নার্ভের ব্লক অপারেশনের পরামর্শ দেন।
অর্থ সংকটের পাশাপাশি মনিরের হার্টে আগে থেকেই একাধিক ব্লক এবং তাঁর ডায়াবেটিসও অনিয়ন্ত্রিত থাকায় অপারেশনের জন্য অনুপযোগী হওয়ায় মনির গত ১৮ নভেম্বর সংকটাপন্ন অবস্থা নিয়েই বাড়ী ফিরে যান। বাড়ী ফিরার কয়েকদিন পর পুনরায় অবস্থার অবনতি হলে পারিবারিক সিদ্ধান্তে ২৩ নভেম্বর মঙ্গলবার থেকে মনিরকে রাজধানী ঢাকার কাকরাইলস্থ ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের নিইরোসার্জন (ব্রেন, স্পেইন এন্ড নার্ভ সার্জন) ডা. কানিজ ফাতেমা ইসরাত জাহান রিফাতের তত্বাবধানে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর পরিপূর্ন চিকিৎসা সম্পন্ন করতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা লাগবে বলে কর্তব্যরত ডাক্তার জানান। অর্থাভাবে এত টাকার চিকিৎসা নেয়া সম্ভব নয় বিধায় মনির জীবনঝুঁকি নিয়েই পুনরায় বাড়ী ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। বাড়ী ফিরে আসার আগের দিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতারা ওই হসপিটালে গিয়ে মনিরকে দেখে আসেন এবং তাঁর চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
লাকসাম-মনোহরগঞ্জের প্রবাসী অনেক বিএনপি নেতাকর্মীরা মনিরের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা করলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
অনেকটা নিরাশ হয়ে মনির গত প্রায় দুই মাসের বেশী সময় অত্যন্ত মানবেতর অবস্থায় নিজ বাড়ীতেই অবস্থায় করছেন। এমতাবস্থায় পারিবারের সদস্যদের সম্মতিতে নিজের বসতভিটা বিক্রি করে অপারেশনের টাকা যোগাড় করার সিদ্ধান্ত নেন মনির।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ মনিরের খাওয়া দাওয়া এবং কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় রাজধানী ঢাকার নিউ ইস্কাটন রোডে অবস্থিত এসপিআরএস এন্ড নিউরোলজী হসপিটালে দেশের বিশিষ্ট নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদের সাথে সাক্ষাত করেন মনির। ডা. দ্বীন মোহাম্মদও মনিরকে দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন।
এদিকে ভিটেমাটি বিক্রির প্রক্রিয়াটি সময় লাগবে বিধায় সেখান থেকে ফিরে এসে মনির তার নিজবাড়ীতে অত্যন্ত মানবেতর অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় দিন দিন মৃত্যুর দিকেই যাচ্ছিলেন। তার কথাবার্তা এখনও অস্পষ্ট।
চিকিৎসায় খোঁজখবর নেয়ায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন লাকসামের বিএনপি নেতা সাংবাদিক মনির আহমেদ।