বর্তমান সরকারের আমলে গণতন্ত্র কবরে গেছে - ডা. জাফরুল্লাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৪ এএম, ১১ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:০২ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দেশের কোথাও গণতন্ত্র নেই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে শেখ রেহানাকে দায়িত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য বোর্ডের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে সব থেকে বড় ব্যর্থতা, গণতন্ত্র কবরে গেছে। ভোট হয় না, লোকে ভোট দিতে পারে না।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। নাসিক নির্বাচনে কিশোর গ্যাংদের উত্থান, গড ফাদার কারা? সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিনগরে কিশোর গ্যাং খ্যাত সস্ত্রাসীদের কর্তৃক জাতীয় মানবাধিকার সমিতির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমটির নির্বাহী সদস্য মোসা. মোরশেদা বেগম এবং তার পরিবারের ওপর হামলার প্রতিবাদে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জাফরুল্লাহ বলেন, এখন আপনার অবস্থা এত খারাপ যে, পন্ডিম দিগন্তে আপনার বিরুদ্ধে ডঙ্কা বাজাতে শুরু করেছে। এটা ঢাকতে আপনি দালাল নিয়োগ করেছেন। দালালরা কখনও সত্যকে চাপা দিতে পারে না। আর আপনি উন্নয়নের কথা বলছেন। অথচ যে কাজ করা যেত ১০/১৫ হাজার কোটি টাকায়, সেটাই ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে করছেন। সর্বত্র অনাচার, দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। এখন সম্ভবত আপনার বোঝার সময় হয়েছে যে, আপনার পদত্যাগ করা উচিত। বরং আপনার বোন শেখ রেহানাকে এসবের সাথে যুক্ত করুন। আপনি শেখ রেহানাকে কোনো কাজই দিচ্ছেন না। অন্তত তাকে মানবাধিকার ও ন্যায়পালের দায়িত্ব দিন, তাকে শিখতে দিন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদেরও অনাচারের জন্য বিচার হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে আইন অনুসারে বা বিচার অনুসারে মোহাম্মদ ইমান আলী চিফ জাস্টিস হওয়ার কথা। উনি আপনাদের (সরকার) কথা এবং আপনাদের হুকুম নাও মানতে পারে। উনি আইন মেনে চলতেন। তাই ওনাকে আপনারা দেন নাই। উনি ছুটিতে গেছেন। কিন্তু ওনারও উচিত ছিলো পদত্যাগ করা। মাননীয় রাষ্ট্রপতি আপনাকেও এসবের জবাব দিতে হবে। আপনার কাঁধে বন্দুক রেখে হাসিনা ফায়ার করছেন। মনে করবেন না যে, বিচারটা কেবল আমার প্রধানমন্ত্রীর হবে। আপনারও বিচার হবে। এই অনাচারের বিচার হবে। সংলাপের নামে রাষ্ট্রপতি অর্থের অপচয় করছেন। আপনার কিছুই করার ক্ষমতা নাই। টিকা কেনায় বাহুল্য ব্যয় হচ্ছে উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্যের এই ট্রাস্টি বলেন, রাশিয়া টিকার জন্য অফার করেছিল মাত্র সাত ডলারে। সেই টিকা আপনারা কিনেছেন ১৪ ডলার দিয়ে। সাথে যুক্ত হয়েছে প্লেনের ভাড়া। আবার কত দিয়ে টিকা কিনেছেন সেটা সংসদেও জানান না। আপনারা সংসদকে অপমান করেছেন। আমার মনে হয় আপনি (শেখ হাসিনা) শারীরিকভাবে অসুস্থ, আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন। আপনি বিশ্রাম নেন, শেখ রেহানাকে দায়িত্ব দেন। আপনি যদি বঙ্গবন্ধুকে সত্যিকার অর্থেই ধারণ করেন কিংবা সম্মানিত করতে চান তাহলে উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব একটি জাতীয় সরকার গঠন করা। জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে যে অনাচারগুলো হচ্ছে সেগুলো পরিবর্তন করা। জাতীয় সরকার ছাড়া এখানে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, গত দুইদিন ধরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বলতে শুনেছি ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের মাধ্যমে বিরোধী দল দমন করছে বর্তমান সরকার। কিন্তু তাদের একটা নেতাকেও বলতে শুনলাম না তারা ক্ষমতায় গেলে এই আইন বাতিল করবেন। কেবল শেখ হাসিনা খারাপ, শুধু তার বিরোধিতা করে লাভ নেই। আপনারা ক্ষমতায় গেলে কি কি পরিবর্তন করবেন সেটার ঘোষণা দেন। আপনারা একাই কিছু করতে পারবেন না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামুন। আপনাদের চরম ব্যর্থতা খালেদা জিয়ার প্রতি অন্যায় হচ্ছে সেটার জন্য এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারলেন না। বক্তব্যে রাষ্ট্রপতিরও সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে অনাচার, অন্যায় ও দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে দেশ। এর দায়ভার রাষ্ট্রপতিকেও নিতে হবে। কারণ রাষ্ট্রপতির ঘাড়ে বন্দুক রেখে ফায়ার করছেন শেখ হাসিনা। বিচার শুধু শেখ হাসিনার হবে না, রাষ্ট্রপতিরও হবে।