হানিফের আসনে নৌকার ভরাডুবি, ১০-১ ব্যবধানে জয়ী বিদ্রোহীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ৬ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:১৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। এই আসনের বর্তমান এমপি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ১টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাশীন দলটি। বাকি ১০টিতে দলটির প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন বিদ্রোহীদের কাছে।
গতকাল বুধবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।
ভোটের এমন ফলাফলে তাৎক্ষণিকভাবে দলটির কোনো শীর্ষ নেতা সরাসরি মন্তব্য করেননি। তবে সাধারণ মানুষের মতে, প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন করায় ভোটের ফলাফল এমন হয়েছে।
ঘোষিত ফলাফলে জানা যায়,
গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত লাল্টু রহমান ৯ হাজার ৪০৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী জাফর উল্লাহ ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ১২৯।
উজানগ্রাম ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন ৬ হাজার ১৭৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলাউদ্দিন বিশ্বাস পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৬ ভোট।
মনোহরদিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জহিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৫৪ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের শহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৫১৫ ভোট।
হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেহেদী হাসান ৭ হাজার ৪২৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন পেয়েছেন ৬ হাজার ৮৩২ ভোট।
আইলচারা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সিদ্দিকুর রহমান পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতালেব হোসেন পান ৬ হাজার ৫১৭ ভোট।
হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মুশতাক হোসেন ৮ হাজার ৮৮৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুর রশিদ পান ৮ হাজার ২৯৬ ভোট।
ঝাউদিয়া ইউনিয়নে মেহেদি হাসান ৫ হাজার ৮৪৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহুরুল ইসলাম ৪ হাজার ৬২৪ ভোট পান।
আলামপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান বিশ্বাস ৯ হাজার ৫০৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী দাউদ হোসেন পান ৫ হাজার ৭৭৪ ভোট।
বটতৈল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান ওরফে মিন্টু ফকির ৮ হাজার ৬৮২ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি–সমর্থিত আবদুল মজিদ পান ৬ হাজার ৩২ ভোট।
আবদালপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলী হায়দার ৫ হাজার ৫২৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী গোলাম মোস্তফা পান ৪ হাজার ৯২০ ভোট।
পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ রেজভি উজ্জামান ৪ হাজার ৯৩৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ সাইদুর রহমান পান ৩ হাজার ৭২৩ ভোট।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী বলেন, ফল বিপর্যয় হয়েছে, এটা মানতে হবে। তবে কেন কী কারণে এমন হলো, সেটা খুঁজে বের করা হবে। দলের ভেতর যদি কারও ইন্ধন বা কারসাজি থাকে, সেটা দেখে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।