দানবিক নয় মানবিক হোন - নজরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩২ এএম, ১ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪১ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয় তাহলে তাঁকে যারা ভালোবাসেন তারা যে কী করবেন আমরা তা জানি না। আমরা দেশে বিশৃঙ্খলা চাই না বলে তাদের অনুরোধ করছি। সরকারকে বলি মানবিক হোন, দানবিক হবেন না। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপিপন্থী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠন জোটেব আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি নির্বাচনে কোটি কোটি ভোট পায়। কিন্তু আমাদের সদস্য আছে কোটিরও কম। যারা আমাদের সংগঠনের সদস্য তারা আমাদের নিজেদের নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আছে। যারা আমাদের শৃঙ্খলার মধ্যে নেই তাদের নিয়ন্ত্রণের সামর্থ্যও আমাদের নেই।
তিনি বলেন, যারা বিএনপিকে সমর্থন না করলেও খালেদা জিয়াকে সমর্থন করেন, খালেদা জিয়াকে না করলেও জিয়াউর রহমানকে সমর্থন করেন- তারা আন্দোলন- সংগ্রামে আছেন। তারা তো আমাদের হুকুম শোনেন না। আল্লাহ না করুক, খালেদা জিয়ার কিছু হয়ে গেলে তারা যে কী করবেন তা আমরা জানি না।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক রাজনীতি করি বলে আজকে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাজ করছি। সরকারকে চিঠি দিচ্ছি, সাক্ষাৎ করছি, মিছিল করছি, অনশন করছি, মানববন্ধন করছি। আপনারা যদি আমাদের গণতান্ত্রিক আচরণ গ্রাহ্য না করেন তাহলে যারা খালেদা জিয়াকে ভালোবাসেন তারা যে কী করবেন আমরা তা জানি না। দেশে বিশৃঙ্খলা চাই না বলে আমরা তাদের অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে সুচিকিৎসার জন্য আন্দোলন করতে হয় এমন কথা কখনো শুনিনি, দেখিওনি। কোনো সভ্য দেশে নাগরিকদের সুচিকিৎসার জন্য আন্দোলন করতে হয় এটা অস্বাভাবিক। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে ক্ষমতার জোরে একটি দেশকে অসভ্য দেশে পরিণত করা হচ্ছে। দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এটিকে কীভাবে স্বাভাবিক বলা যায়।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, কেউ বলে তিনি এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। তবে সেখানে টাকা ছিল দুই কোটি, আজ সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কোটিরও বেশি। এক পয়সাও সেখান থেকে কেউ নেয়নি। কিন্তু গত ১০ বছরে এই দেশ থকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। দেশের শেয়ারবাজার লুট করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকা লুট হয়েছে। এটা কে করেছে তা বের করুন, তাদের শাস্তি দিন। তা না হলে সবাই মনে করবে এর সঙ্গে আপনারা জড়িত। অর্থমন্ত্রী তদন্ত কমিটি গঠন করলেন। তদন্ত রিপোর্ট পেয়ে অর্থমন্ত্রী বললেন- ‘এ রিপোর্ট তো প্রকাশ করতে পারবো না।’ এতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ লোকজন জড়িত আছে। এরা কারা জনগণ জানতে চায়। এই পরিমাণ টাকা যদি দেশের তহবিলে থাকতো তাহলে বিদেশিদের কাছে আমাদের হাত পাততে হতো না।
আজকে অমানবিক আচরণ শুধু খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে না প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে। বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ নিয়ে সম্মেলন হয়, আর আমাদের সেখানে দাওয়াত দেয়া হয় না। তারা বিশ্বাসই করে না বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আজকে দেশের বড় বড় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিদেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এটা শুধু তাদের জন্য লজ্জাকর বিষয় নয়, পুরো দেশের জন্য লজ্জাজনক, যোগ করেন নজরুল ইসলাম খান।
সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।