বগুড়ায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংসদ মোশারফ হোসেনের উপর হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১০ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৪৪ এএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংসদ মোশারফ হোসেনের উপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিএনপির সাংসদ মোশারফ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে নাস্তা করছিলাম। এমন সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে হামলা করে। সাংসদ আরো বলেন, এই ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ জড়িত বলেও উল্লেখ করেন। ওসি সাংসদকে হামলা হবে উল্লেখ করে শহীদ মিনারে যেতে নিষেধ করেছিলেন। সাংসদ পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েও পাননি। ফলে বিজয় দিবসের অন্যান্য অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন।
জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা’র নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান।
এর আগে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে যান।
শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পনের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা বেগম ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের দেশে ফিরে আনার দাবিতে’ স্লোগান দিলে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা তড়িঘড়ি করে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন শেষ করে বাসস্ট্যান্ডে ফিরে আসেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি হোটেলে বসে নাস্তা করছিলেন। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে আসেন এবং দলীয় স্লোগান দিতে থাকে। এসময় হোটেলে থাকা বিএনপির নেতা কর্মীরাও দলীয় স্লোগান দিতে শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় কমপক্ষে ১০টির বেশি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৩ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
জানতে চাইলে বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনের সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের উপর হামলা করেছে। এতে ৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এরমধ্যে একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আমি এমপি হিসেবে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েও পাইনি। এ কারণে নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলা প্রশাসনের বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করেছি। এ ঘটনার সাথে থানার ওসি জড়িত বলে তিনি জানান। সাংসদ বলেন, এই হামলার ঘটনার দায় ওসি কোনভাবেই এড়াতে পারেন না।
অপরদিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির লোকজন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে স্লোগান দিয়ে হোটেল থেকে আওয়ামী লীগ অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৭ জন নেতাকর্মী আহত হন। তিনি বলেন, বিএনপি বহিরাগত লোকজন এনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিজয় দিবসের পরিবেশ নষ্ট করেছে। একারণে আমরা উপজেলা প্রশাসনের বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।
এবিষয়ে নন্দীগ্রাাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার পর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।