কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতার মাদক সেবন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ৩০ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৫০ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুষ্টিয়া সদর উপজেলর পাটিকাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফর আলীর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষে বসে মাদক সবনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদক সেবনের একাধিক ভিডিও এলাকার মানুষের মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছে। এরকম ভিডিও’র ক্লিপ ছড়িয়ে পরার পর দলসহ সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
দলীয় নেতারা বলছেন, এমন ঘটনা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরফ উদ্দিন চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি পরপর দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়, ২০১১ সাল থেকে টানা দুইবার আওয়ামী লীগ নেতা সফর আলী চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। এবারো দলীয় মনোনয়ন পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন কমিটি থেকে তার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে আগামী ৫ জানুয়ারি এই ইউনিয়নে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার সকালে দলীয় মনোনয়ন নিতে সফর আলী ঢাকাতে আছেন।
এরই মাঝে গত কয়েকদিন ধরে পাটিকাবাড়ীসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে মানুষের মোবাইলফোনে চেয়ারম্যানের ফেনসিডিল সেবনের একাধিক ভিডিওক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে।
এক মিনিট চার সেকেন্ড ও এক মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের দুটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, চেয়ারম্যান পরিষদে তার কক্ষে বসে ফেনসিডিলের বোতলের কর্ক খুলে সেবন করছেন। আবার কখনো কলেমঘরের সাথে যুক্ত টয়লেটের ভেতর তিনি মাদক সেবন করছেন। শীতকালের এই ভিডিওগুলো কবে কখন তোলা সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পাটিকাবাড়ী গ্রামের এক তরুণ বলেন, চেয়ারম্যান বিভিন্ন সভা সমাবেশে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেন। কিন্তু তিনি নিজেই নিয়মিত মাদক সেবন করছেন। এটা যুবসমাজকে দিন দিন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, দ্রুত তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক।
পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের এক ইউপি সদস্য ইব্রাহীম খান বলেন,‘যেটা দেখলাম এটা যদি সত্যি হয়, তবে খুবই খারাপ কাজ করেছেন। এটা লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী যেখানে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন সেখানে ইউনিয়নে বসে মাদক সেবন লজ্জাজনক।’
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘এমন ঘটনা অবশ্যই দলের জন্য দুঃখজনক। দলীয় সভায় বিষয়টি তুলে ধরা হবে। সর্ব ম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত হবে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী প্রথম, ‘যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। কারণ হচ্ছে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের সরকার জিরো টলারেন্স। সমাজটাকে এই মাদক নষ্ট করছে। অফিসে বসে মাদক সেবন করে, এটা কাম্য না। আওয়ামী লীগের বদনাম হবে, এটা বরদাস্ত করা হবে না। দলীয়ভাবে অবশ্যই এর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সফর উদ্দীন দাবি করেন,‘এটা কিভাবে কারা বানিয়েছে, তা জানা নাই। আমি দেখি নাই, শুনছি। আমাকে কয়েকজন ফোন করে জানিয়েছে।’