‘সাংবাদিকদের ফাটিয়ে ফেলবি পুলিশ তোদের সাথে আছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৪ এএম, ২৯ নভেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৩৬ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সাংবাদিকদের ফাটিয়ে ফেলতে কর্মী ও দলীয় বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ। পুলিশের উপস্থিতিতে চরপাতা ইউনিয়ন অফিসে রাতে এই হুমকি ও নির্দেশ দিলে পুলিশ তখন অসহায় নীরব দর্শক। সাথে ছিলেন যুবলীগ নেতা। নির্বাচনি সংবাদ সংগ্রহে ঢাকা থেকে আগত একদল সাংবাদিককে গতরাতে তিনি এই হুমকি দেন। একমাত্র নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়া আর কারো পোস্টার তারা লাগাতে দেননি বলে অপর তিন প্রার্থী সাংবাদিকদের জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান তার সাথে থাকা লোকজনদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘সাংবাদিকদের ফাটিয়ে ফেলবি পুলিশ তোদের সাথে আছে’।
পুলিশ কর্মকর্তা অসিমকে বলেন, এরা কারা? সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখানে আপনাদের কাজ কী? আপনারা কেন এসেছেন? ৫ নম্বর চরপাতা ইউনিয়নে রাতে সর্বত্র ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজমান ছিল। সাংবাদিকরা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারকে হুমকির কথা জানালে তারা নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তৃতীয় ধাপে গতকাল রবিবার দেশের ১ হাজার ইউপিতে ভোটগ্রহণ চলছে। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ১০টি ইউপিতে ভোট চলছে। যদিও ১০ জনের মধ্যে ৩ জন চেয়ারম্যান পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৫ নম্বর চরপাতা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিদ্রোহী প্রার্থী খোরশেদ আলম বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়নি। নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম, হুমকির ঘটনা নিয়ে আমি ৯টি অভিযোগ করেছি। কিন্তু প্রশাসনকে অভিযোগ দেয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একই ইউনিয়নের আরেক স্বতন্ত্রপ্রার্থী হাজী বিল্লাল হোসেন (আনারস) ও হিজবুল্লাহ গুনু (মোটরসাইকেল) সাংবাদিক এসেছে শুনে ইউনিয়ন পরিষদে ছুটে আসেন। তারাও একই ধরনের অভিযোগ করেন। প্রতিপক্ষের ভয়ে পালিয়ে থাকেন বলেও তারা অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনের বৈধ অনুমতি বা পরিচয়পত্র থাকলে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ এ ধরনের কর্মকান্ড করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, আবাধ ও সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন দিতে আমরা শতভাগ প্রস্তুত। আমরা নির্বাচনি আইন অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। কোনো অন্যায়কারীকে ছাড় দেয়া হবে না। কেউ কোনো বিশেষ সুবিধা পাবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা বলেন, বহিরাগতদের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। বহিরাগতদের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন আকন্দ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে।