বিএনপির সমাবেশে জনতার ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৮ এএম, ৩১ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ০৮:৪৪ পিএম, ১৪ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
২০২১ সালে সরকার পরিবর্তনের প্রত্যাশায় ‘জন-ঐক্যে’র সংকল্প ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে প্রহসনের নির্বাচন করেছে। একদলীয় সরকার কায়েম হয়েছে। বাংলাদেশে লুটপাটের রাজনীতি শুরু হয়েছে। ব্যাংক লুট করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে সরে যেতে বাধ্য করতে হবে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মহানগরসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী বিভিন্ন প্লাকার্ড হাতে এই সমাবেশে অংশ নেন। সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে উপস্থিত হয়। পুলিশ মৎস্য ভবন, তোপখানা সড়কের মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে নেতাকর্মীদের আসতে বাধা প্রদান করে। সমাবেশ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের চারপাশের এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও বুধবার সারাদেশে জেলা ও মহানগরেও একাদশ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ বছর শেষ হচ্ছে। আগামী বছরে আসুন আমাদের সকলের একটাই সংকল্প হবে, শপথ হবে ঐক্য। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দানবীয় সরকার, এই স্বৈরতান্ত্রিক সরকার, একনায়কতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটি সরকার আমরা প্রতিষ্ঠা করব জনগণের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। এখন আমাদেরকে এক হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমগ্র রাজনৈতিক দলগুলোকে আবার আমি আহবান জানাচ্ছি যে, আসুন গণতন্ত্রকে উদ্ধারের যে সংগ্রাম এই সংগ্রাম শুধু একা বিএনপির নয়। সকল রাজনৈতিক দল, সকল মানুষকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অবশ্যই একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সমাবেশে দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব। সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীদের পুলিশি বাধা প্রদান ও গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের খুব দুঃখ হয়, লজ্জা হয় যখন দেখি আমাদের আজকের এই সমাবেশে আসতে বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হচ্ছে। যখন দেখি এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে অসংখ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আর লজ্জা হয় যখন দেখি এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলছেন যে, তারা গণতন্ত্র দিয়েছেন বলেই নাকি দেশ খুব ভালো চলছে। আজকের এই দিনটি হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময় একটি দিন। এই দিনে বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য। সেই আকাক্সক্ষা সেই চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে একটা প্রশাসনের জোরে নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। এই দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও কলঙ্কের একটা দিন।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় থেকে তারা বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধবংস করে দিয়েছে, তারা আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা ধবংস করেছে, প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে, তারা আমাদের অর্থনীতিকে ধবংস করেছে এবং বাংলাদেশে একটা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। আপনারা দেখেছেন মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা লুট, আপনারা দেখেছেন আমাদের শেয়ারবাজার ধবংস করে ফেলা হয়েছে, ব্যাংক-বীমাকে লুট করে আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ধবংস করে ফেলা হয়েছে। আমাদের এ বছরটা কোভিড শুরু হওয়ার পর থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে জনগণকে একটা বিপন্ন অবস্থার মধ্যে নিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিনই গণতন্ত্র বিশ্বাস করেনি। তারা সবসময় গণতন্ত্রের বিরোধিতা করেছে, কাজ করেছে উল্টো। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম আমাদের দেশের মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা থাকবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে অনেক পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, অনেক সাংবাদিককে জেলে পাঠানো হেেয়্ছ, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে অনেক সাংবাদিককে কারাগারে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। এই সরকার গোটা দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে। এই সরকার বাংলাদেশের মানুষগুলোকে একটা শ্বাসরুদ্ধ করে একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আজকে এই অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে, সমগ্র মানুষকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্ত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে বাধ্য করতে হবে এই সরকারকে সরে যেতে এবং একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে তাদের অধীনে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করাতে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই কমিশন সারাদিন মিথ্যা কথা বলে। যে কথাগুলো শুনলে লোকে হাসে। এখন নাকি খুব সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে, চমৎকার নির্বাচন হচ্ছে। যেখানে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না মানুষ। ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করে। একখানে দিলে আরেকখানে ভোট পড়ে। ধানের শীষে ভোট দিয়ে নৌকায় গিয়ে পড়ে-এই অবস্থা তারা (নির্বাচন কমিশন) তৈরি করেছে। কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতারও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইভিএমে এক জায়গায় ভোট দিলে আরেক জায়গায় পড়ে। ধানের শীষে ভোট দিলে নৌকায় পড়ে।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ সারাদেশে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। গোটা দেশকে কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। এই থেকে মুক্ত হতে হলে এই অবৈধ সরকারকে সরে যেতে বাধ্য করতে হবে।
ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ সভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।
এছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম রবি, আকরামুল হাসান, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, জাসাসের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, বিএনপি নেতা বজলুল বাসিত আনজু, আবদুল আলীম নকি, আলহাজ এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন, ইউনুস মৃধা, এজিএম শামসুল হক, গোলাম সাবের চৌধুরী কিরন, মোঃ ইকবাল হোসেন, হেলাল তালুকদার, আলাউদ্দিন সরকার টিপু, রেজাউল রহমান তপন, রবিউল ইসলাম রবি, মো. দ্বীন ইসলাম, জামিল উদ্দিন সোহেল, মো. ইসমাইল ভূইয়া, ভিপি হানিফ, আনিসুর রহমান সরোয়ার তালুকদার, আবদুল মান্নান, বেল্লাল হোসেন, কাজী সাব্বিরসহ মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ : গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কর্তৃক আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে ৩০ ডিসেম্বরকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করে আসছে বিএনপি। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয় দলটি। সকাল ১০টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সমাবেশ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শুরু হয়ে যায়। সমাবেশ শুরুর পর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ। পরে আস্তে আস্তে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসলে সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতি’ উল্লেখ করে দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ বুধবার দুপুরে মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে ভোট ডাকাতির প্রতিবাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ সভাপতি আশরাফুল আলম লিংকন, পার্থদেব মন্ডল, মামুন খান, সাজিদ হাসান বাবু, যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন রাজু, তানজিল হাসান, রিয়াদ ইকবাল, সহসাধারণ সম্পাদক সাখওয়াত হোসাইন, সাবেক সদস্য ফয়সাল আহম্মেদ সোহেল প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিন্দা ও প্রতিবাদ : বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির বিভিন্ন থানার নেতা যথাক্রমে মনির, স্বপন, লোকমান, হামিদ, ছাত্রদল নেতা জিসান আহমেদ সূর্য, মোঃ সাগর, হানিফ, কবির, আবু তাহের মানিক, ফারুক হোসেন, মোঃ রিপন, মোঃ আনু, মোঃ সরওয়ার, মোঃ কাশেম, নজরুল ইসলাম, আলমগীর বাবু, মোঃ সাইফুল, মোঃ নাছির, শহীদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, মোঃ মাসুম, মোঃ সুরুজ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির বিভিন্ন থানার নেতা কাউসার, বাবুল, মঈন, মেহেদী হাসান, শাকিল, নাঈম, সৌরভ, শরীফ, রবিউল, নুরুজ্জামান, রমজান, রাব্বী, নয়ন, আবহানী, মোশাররফ, উজ্জল, হিমেল, যুবদল নেতা কামাল, ঢাকা জেলাধীন নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তাঁতী দল নেতা রাজিব হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবুল কালাম, আজাদ, সোহান, শুভ, দেলোয়ার, রবিন, বাদল, দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোঃ রুবেল, ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীরুল ইসলাম টুটুল, মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ফয়সল, সহ-সভাপতি নাজমুল আলম, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদল নেতা আয়ান আহমেদসহ সারাদেশ থেকে কমপক্ষে ৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং পুলিশি লাঠিচার্জে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির বিভিন্ন থানার নেতা যথাক্রমে আহমেদ ইমতিয়াজ টিপু, সাব্বির আহমেদ, মোখলেসুর রহমান, মোঃ সুমন, আবির, নাঈম, রিমন, আসিব, ছাত্রদল নেতা মোঃ মঈন, মোজাম্মেল খান পাঠান, ইসমাইল খান, জাহিদ রহমান জয়নাল, এস কে হাসান, মোঃ ইমরান, আল আমিন সরকার, নাজমুল ইসলাম হিমেল, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদল নেতা খন্দকার এনামুল হক এনাম, গিয়াস উদ্দিন মানিক, খালিদ হাসান জ্যাকি, আক্তার হোসেন, আসাদুজ্জামান মাসুদ, মনিরুজ্জামান হীরা, সাদ্দাম হোসেন, মুজাহিদুল ইসলাম মেজবাহ, পারভেজ আহমেদ, মোঃ মিলন, মনির হোসেন, মোঃ মামুন, শেখ আহম্মেদ, আরিয়ান রবিন সর্দার, মমিন আহমেদ, ঢাকা জেলাধীন দোহার পৌর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, রামপুর থানা কৃষক দল নেতা মোঃ মঈনসহ প্রায় ৭০ জন নেতাকর্মীকে আহত করার ন্যক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে অব্যাহত গতিতে গ্রেফতারের মাধ্যমে সমগ্র দেশে পুলিশি রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ও আইনের শাসনের কোনো মূল্য নেই। দেশে করোনা সংকট মোকাবেলায় উদ্যোগ নয়, বরং বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার ও তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে গায়ের জোরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখাকেই সরকার তাদের প্রধান কর্মসূচিতে পরিণত করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য হু-হু করে বাড়ছে, অথচ সেদিকে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, কিন্তু বিরোধী দলের কর্মসূচির ওপর হামলা ও নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করতে সরকার যেন সদা তৎপর। এরই ধারাবাহিকতায় আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে এবং দেশব্যাপী বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হামলা চালিয়ে আহত করেছে পুলিশ। বর্তমান সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে এই গ্রেফতারের হিড়িকে দেশে সম্পূর্ণভাবে নাৎসীরাজ কায়েম হয়েছে। সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী কর্তৃক নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার অপকর্মটি যেন সরকারের চিরস্থায়ী কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।