বিভিন্নস্থানে গণতন্ত্র হত্যা দিবস
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:২৫ এএম, ৩১ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ০৮:০৪ এএম, ১৩ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা এবং আওয়ামী লীগ একসাথে যায় না, স্বাধীন বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম কখনোই হয়নি। স্বাধীনতার পর ’৭৩-এর নির্বাচন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি আওয়ামী লীগের শাসনামলে কোনো নির্বাচনই স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়নি। ’৭৫-এ বাকশাল গঠনের মাধ্যমে শেখ মুজিব যে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করেছিলেন বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তারই ধারাবাহিকতায় দেশে সকল বিরোধী মতকে দমনে চরমপন্থার আশ্রয় নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোটের জন্য নির্ধারিত তারিখ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করে ২৯ তারিখ রাতেই ভোট কেটে বাক্স ভরে রেখেছিল। আর একাজে সরকারের আজ্ঞাবহ দাস হিসেবে কাজ করেছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। সরকার তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে চরম দলবাজি আর অপেশাদারিত্বে পরিপূর্ণ করে এক ভয়ংকর অপরিণামদর্শী খেলায় মেতেছে। পুলিশ কর্মকর্তারা পোশাক পরে এখন দলীয় গুন্ডাদের ভাষায় কথা বলছে। কে দল আর কে যে সরকারি কর্মচারী তা এখন পৃথক করে দেখার পরিস্থিতি দেশে নেই।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে আজ বুধবার গণতন্ত্র হত্যা দিবস কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনের মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তারা আরো বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর অবস্থা আরো করুণ। কোনো আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ এখন আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় না, কারণ অবস্থা এমন যে সরকারদলীয় প্রতীক পেলে সংশ্লিষ্ট পদমর্যাদা পেতে তা ঐ প্রার্থীর জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। দেশে চলছে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য, সরকারের মন্ত্রী, এমপি এবং দলীয় নেতা, পাতিনেতা, চামচা, সরকারে সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী ও আমলাদের বিপুলসংখ্যক এখন দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত।
সভায় বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক, শেখ মুশাররফ হোসেন, এড. ফজলে হালিম লিটন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, আবু হোসেন বাবু, সিরাজুল হক নান্নু, জিএম কামরুজ্জামান টুকু, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, রেহেনা ঈসা, এড. তসলিমা খাতুন ছন্দা, নাজমুল হুদা সাগর, হেমায়েত হোসেন, সাইমুন ইসলাম রাজ্জাকসহ অনেকে। সভা পরিচালনা করেন আসাদুজ্জামান মুরাদ ও অহেদুর রহমান রানা।
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর জানান, রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলের গতিরোধ করে। পরে সেখানেই নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আফছার আলী, মাহাবুবুর রহমান মাবু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রইচ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক আশফাকুল ইসলাম বসুনিয়া আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান বাদল, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুস সালাম, মহানগর যুবদল সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহাফুজুর রহমান ডন, সাংগঠনিক সম্পাদক জহির আলম নয়ন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি মনিরুজ্জামন হিজবুল, তাঁতী দল মহানগর কমিটির আহবায়ক মো. শাহেদ ইকবাল ও সদস্যসচিব এম এম আলম পান্নাসহ নেতৃবৃন্দ।
বক্তাগণ ৩০ ডিসেম্বরকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস উল্লেখ করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীন অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করেন। এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে নেতাকর্মীদের বাসায় গতরাতে পুলিশ হানা দিয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী জানান, সারাদেশের ন্যায় নরসিংদীতেও ৩০ ডিসেম্বর ভোটাধিকার হত্যা দিবস উপলক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি।
আজ বুধবার সকালে জেলা বিএনপির নিজ কার্যালয় থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দিকে আসার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে এ বিক্ষোভ সমাবেশ। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজ কার্যালয়ের সামনেই এ সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, আকবর হোসেন, এড. বাছেদ, দীন মোহাম্মদ দীপু, গোলাম কবির কামাল, ফারুক উদ্দিন ভূঁইয়া, আমিনুল হক বাচ্চু, হাবিবুর রহমান মিলন, শাহেন শাহ শানু, কবির আহমেদ।
মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, গতকাল ৩০ ডিসেম্বর বুধবার কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি গণতন্ত্র হত্যা দিবসের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে মেহেরপুর জেলা বিএনপির উদ্যোগে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন এবং পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস। এছাড়া সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে মাসুদ অরুন বলেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই অবরুদ্ধ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।
তারাকান্দা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহের তারাকান্দায় গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে এবং একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ ও সমাবেশ পুলিশের বাধার মুখে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের নেতৃত্বে মহাসড়কে আসতে চাইলে উত্তর বাজাস্থ ঈদগার মাঠ প্রাঙ্গণে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। সেখানে সমাবেশ করে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, তারাকান্দা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক, ইয়াসিন আলি, এটিএম মোখলেছুজ্জামান মুকুল, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম রাসেল মন্ডল, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম মন্ডল, তারাকান্দা উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, আলমগীর হোসেন রকি, উত্তর জেলা মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক হযরত আহম্মেদ সাকিব, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফজলুল হক প্রমুখ।
পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি জানান, জয়পুরহাট জেলা বিএনপির গণতন্ত্র হত্যা দিবস পুলিশের বাধায় ভন্ডুল হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১১টায় জয়পুরহাট স্টেশন রোড সংলগ্ন জেলা বিএনপির কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করার জন্য নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন।
এ সময় জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ নির্ধারিত কর্মসূচি প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করার জন্য কার্যালয়ে যেতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে কার্যালয় খুলতে পারেননি।
পুলিশের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যক্ষ শামছুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহবায়ক গোলজার হোসেন ও এম এ ওহাব, আহবায়ক কমিটির সদস্য মতিয়র রহমান, অধ্যক্ষ আলী হাসান মুক্তা, আমিনুর রহমান বকুল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এটিএম শাহনেওয়াজ কবির শুভ্রসহ নেতৃবৃন্দ।