সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহবান
খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ: মঞ্জুসহ আহত ৭১ গ্রেফতার ৫ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩৯ পিএম, ২২ নভেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৮ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপে কমপক্ষে ৭১জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে আর গ্রেফতার হয়েছে ৫জন।
আজ সোমবার বেলা পৌনে ১২ টার দিকে কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চলাকালে পুলিশের হামলায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। এসময় নেতাকর্মীদের সমাবেশ স্থলে যেতে বাধা দেয় খুলনা সদর থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু সভাপতিত্বে সমাবেশ শুরু হয়। হঠাৎ করে নেতার্মীদের ওপর বেপরোয়াভাবে পুলিশ চড়াও হয় এবং লাঠিচার্জ শুরু করে। তিন দফায় পুলিশ হামলা চালায়। এতে নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ ৭১জন নেতাকর্মী আহত হয়। পুলিশ বিএনপি নেতা শেখ জামিরুল ইসলাম জামিল, মেহেদী হাসান সোহাগ, হেদায়েত হোসেন হেদু, মোস্তফা ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেফতার করে।
নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে মারমুখী আচারণ করেছে। তাদের আঘাতে আমাদের কিছু নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। হামলা মামলা করে পুলিশ আমাদের দমাতে পারবেনা। খুলনার জণগন রক্ত দিতে প্রস্তুত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য যে কোন আন্দোলন করতে পারে। সেখানে পুলিশ কোন আক্রমণ করতে পারবে না। অনুমতি দেওয়া সত্বেও পুলিশ আমাদের উপর চড়াও হয়েছে।
মঞ্জু বলেন, নেত্রীর মুক্তির জন্য মানবিক কর্মসূচীর আয়োজন করে নগর ও জেলা বিএনপি। সকাল থেকে প্রশাসন কার্যালয় ঘিরে রাখে। পুলিশকে তিনি সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। পুলিশ তা না করে সাধারণ নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে। জনতার রোষানলে পড়ে পুলিশ পিছু হাটতে বাধ্য হয়। পরে আবার তারা সমাবেশ শুরু হয়। সোয়া ১২ টার দিকে আবারও হামলা চালায়। নেতাকর্মীদের সরে যাওয়ার জন্য গুলি করার হুমকি দেয়। আমাকেও গুলি করার হুমকি দেয়। তৃতীয় দফায় এসে তারা আমাকেসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত ও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কয়েক রাউন্ড টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছেন। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশ বিএনপির গনতান্ত্রিক ও মানবিক কর্মসুচিতে তান্ডব চালিয়েছে। পুলিশের এহেন অসভ্য, অমানবিক ও নগ্ন আচরন শান্তিপ্রিয় জনগন মোটেই সমর্থন করে না।
খুলনার পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশ্যে বলেন, কার নির্দেশে এবং কাকে খুশি করার জন্য এ ধরনের নগ্ন হামলা চালিয়েছেন? একদিন তার জবাব দিতে হবে। সেদিন আর বেশি দুরে নয় অবৈধ সরকারের পদলেহনকারিদের চিহ্নিত করে একটি একটি করে বিচার করা হবে। বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বেগম খালেদা জিয়াকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চাচ্ছে। সরকার মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে তাকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। সরকার বেগম খালেদা জিয়ার সাথে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করছে। কারাগারে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় বর্তমানে তার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন। তিনি আবারো সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়েছেন।
এদিকে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আমির এজাজ খান, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, শাহ জালাল বাবুল, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, সাইফুর রহমান মিন্টু, সিরাজুল হক নান্নু, আবু হোসেন বাবু, মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, জিএম কামরুজ্জামান টুকু, মোল্লা মোশাররফ হোসেন মফিজ, আসাদুজ্জামান মুরাদ, শামসুল আলম পিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গালিব ইমতেয়াজ নাহিদ সহ অনেকে।
সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত দলীয় কর্মীরা জড়ো হতে থাকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।