পৌর নির্বাচনে ফল ছিল আগের মতোই পূর্বনির্ধারিত-মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৫ এএম, ৩০ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ১০:৪৩ পিএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
পৌর নির্বাচনে ফলাফল আগের মতোই পূর্বনির্ধারিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পৌর নির্বাচনের অনিয়ম বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে নির্বাচন কমিশন বলেন আর সরকার বলেন এগুলো মূলত হয় বেসামরিক আমলা অথবা সামরিক আমলা। তারাই সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারাই চালায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাজনীতিবিদদের আর কোনো জায়গা নেই। রাজনীতিবিদরা এখন পেছনে পড়ে গেছে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের বড় বিপদ হয়ে দাঁড়ায় যে রাজনীতিবিদরা পেছনে চলে যান। সেই আইয়ুব খান ও এরশাদের আমলে তাই হয়েছে। আর এখন দুর্ভাগ্যজনকভাবে আওয়ামী লীগের আমলেও সেটাই হচ্ছে। যে আওয়ামী লীগ জনগণের দল ছিল, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছিল বলে দাবি করে, সেই আওয়ামী লীগ পুরোপুরি একটি কর্তৃত্ববাদী, বিচ্ছিন্ন এবং লুটপাটের একটা দলে পরিণত হয়েছে।
ইভিএমের অগ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে শুধু আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইউরোপের দেশ, এমনকি ভারতও কিন্তু ইভিএমের বিরুদ্ধে কথা বলছে। মেশিন কখনোই একেবারে পারফেক্ট হয় না। আমার হাত দিয়ে যখন ভোটটা দেই সেটা কিন্তু পারফেক্ট হয়।
তিনি বলেন, ২০২১ সালে অন্তত জনগণের যে অধিকার, তা ফিরে পাওয়ার জন্য প্রত্যাশা করব’ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘২০২০ সালকে আমরা ভালো কিছু দিতে পেরেছি বলে বলতেই পারি না। আমরা প্রত্যাশা করব যে জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হবে।
‘এ বছরটা শুধু আমাদের জন্য নয়, সারা পৃথিবীর জন্যই খারাপ বছর’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের জন্য খারাপ প্রধানত দুটো কারণে। সরকারের কর্তৃত্ববাদের যে চেহারা তা প্রচন্ডভাবে স্পষ্ট হয়েছে। সাংবাদিকদের অনেককে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে, সত্য কথা লেখার জন্য। ডিজিটাল আইনে বহু সাংবাদিককে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে। ধর্ষণ, দুর্নীতি ও জনগণের অধিকার হরণও এ বছর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।
স্বাস্থ্য খাতে যে পরিমাণ বরাদ্দ করা হয়েছে এবং ব্যয় হয়েছে তার ৮০ ভাগ চুরি হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে চুরিটা কিভাবে হয়। যন্ত্রপাতি, ইকুইপমেন্ট কিনছে কিন্তু সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। ওটি তিনটা বানানো হয়েছে কিন্তু জেনারেটর নাই, জেনারেটর আছে তো তেল নেই। একই সঙ্গে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যাপারটা। সরকার থেকে বলা হচ্ছে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা হবে ভারত থেকে। যেটা অক্সফোর্ড থেকে আসছে সেটা। এটা কে সংগ্রহ করবেন? একজন ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানির মালিক যিনি এই সরকারের একজন উপদেষ্টা। তারা প্রায় দেড় ডলার বেশি দিয়ে এই ওষুধগুলো আনছে। এই যে সরকারের প্রতিটি ক্ষেত্রে চুরি করার যে পরিকল্পনা, সেভাবেই তারা চুরি করছে। এটা শুধু স্বাস্থ্য খাতে নয় সব ক্ষেত্রে চলছে।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিন দিনের সফরে আসা মির্জা ফখরুল ঢাকার উদ্দেশে ঠাকুরগাঁও ত্যাগ করেন।