ঐক্য গড়ে নতজানু সরকারকে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে অপসারণ করবো-হাফিজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩০ এএম, ৩০ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০৯:২৩ পিএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সকলে ঐক্য গড়ে এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অতি নতজানু এই সরকারকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে অপসারণ করার অঙ্গীকার করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম।
আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ‘বিজয়ের ৪৯তম প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, আজকে সবার কাছে এই প্রত্যাশা আপনারা মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনাকে গ্রাম-গ্রামান্তরে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাধ্যমে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিন। বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আমার বিনীত আহবান, এই দুঃশাসনের জগদ্দলপাথর, আওয়ামী দুঃশাসনকে অপসারণ করার জন্য রাজপথে নেমে আসুন। যারাই রাজপথে নেমে এই সরকারকে অপসারণ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবে, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে, মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধার করবে আমরা সবাই তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে রাজপথে দৃঢ় পদক্ষেপ রাখবো। সাধারণ মানুষ ও সংগ্রামী মানুষের সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অতি নতজানু এই সরকারকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে অপসারণ করবো এই হোক আজকের দিনে আমাদের অঙ্গীকার।
দেশের দুরবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ দেখে দুঃখ লাগে। সকল পর্যায়ে দুর্বৃত্তায়ন। কোথায় গেল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামজিক ন্যায়বিচারের সেই লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। সবচেয়ে দুঃখ হয় শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ দেখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এখন যুবলীগের নেতা হতে চান, এই হলো শিক্ষাঙ্গন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা প্রফেসর বিগত ডাকসু নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করতে গিয়ে আগেই সিলমারা ব্যালট বাক্স হাতে ধরা পড়েছেন, এই হলো মহিলা প্রফেসরের স্ট্যান্ডার্ড। প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একদল মূর্খ বেরিয়ে আসছে যারা বাংলায় একটা চাকরির দরখাস্ত লিখতে পারবে না। এটি আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র সুচিন্তিতভাবে এমন সব ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছে এরা দেশকে ক্রমান্বয়ে অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ কেন? কোন কাজটা বন্ধ আছে বাংলাদেশের। কেন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এর উত্তর আমি খুঁজে পাই না।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের পন্ডিত অর্থনীতিবিদ, বিশিষ্ট দালাল বুদ্ধিজীবী এবং চামচারা আমাদের বুঝাবার চেষ্টা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে দেখেন না আপনারা। আমরা তাকাই আমাদের সামনে বুভুক্ষু মানুষ, ক্ষুধার্ত মানুষ, আমাদের চোখের সামনে কথা বলতে পারে না অধিকারহারা মানুষ। ওদের দেখে দেখে মনের মধ্যে, বুকের মধ্যে ক্ষোভ জমতে থাকে, বিদ্রোহ করতে চাই। তখন আমাদের সামনে পুলিশ লেলিয়ে দেয়া হয়। একটা সার্ভে হয়েছে পাঁচ দিন আগে সময় টিভি দেখিয়েছে। গত ৬ বছরে পুলিশ ১৮শ মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করেছে। ওখানে মেজর সিনহাকে হত্যা করেছে, সিলেটে রায়হানকে হত্যা করেছে, রংপুরে প্রতিবন্ধী রিকশাচালককে হত্যা করেছে। আর একটা সিনেমা বানিয়েছে, সেই সিনেমার মধ্যে একটা ডায়লগ আছে বলে ছবির অভিনেতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। এই হচ্ছে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের অধিকার।
তিনি বলেন, আর ভোটের কথা যদি বলেন, গতকালকে পৌরসভার ভোট হলো না দেখেছেন ফলাফল। ২৪টা সিটের মধ্যে আওয়ামী লীগ জিতেছে কয়টা? বিএনপি কয়টা? ওরা (সরকার) বলে বিএনপি এতোই অধঃপতিত দল যে, ওরা যাওয়ার জায়গা পাচ্ছে না, পথভ্রষ্ট, দিক-নির্দেশনাহীন। আমি বলতে চাই, একবার পুলিশ তুলে নাও, একবার কথা বলার অধিকার দাও, তারপরে ভোট দাও। তারপরে ফলাফল দেখো। ওরা সেটা দেবে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের নামার আহবান জানান মান্না।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টির ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের কালাম ফয়েজী, রায়হান আল মাহমুদ রানা প্রমুখ ।