খুলনায় পুলিশের লাঠিচার্জ ও ব্যানার মাইক ছিনিয়ে নেয়ার মধ্য দিয়ে পালিত বিএনপি'র অনশন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১৮ পিএম, ২০ নভেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৩৯ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
খুলনায় পুলিশের লাঠিচার্জ, ধাওয়া, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, সিনিয়র নেতাদের টানা হেচড়া ও ব্যানার-মাইক ছিনিয়ে নেয়ার মধ্যেও সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনশন করেছে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি।
আজ শনিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুই ঘন্টা পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডা শেষে বেলা ১১টায় দলীয় কার্যালয়ের অভ্যন্তরেই অনশন করেছে নেতাকর্মীরা।
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে অনুমতির দাবিতে কেন্দ্র থেকে অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনশন কর্মসুচি পালনের ঘোষনা থাকলেও পুলিশের বাধায় নির্ধারিত সময়ে শুরু করতে পারেনি বিএনপির অনশন।
সকাল থেকে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হতে থাকে কিন্তু পুলিশ দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনশন করতে দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। অনেকক্ষণ পুলিশের সাথে এ বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পুলিশ নেতাকর্মীদের টেনে হিচড়ে তুলে দেয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অবস্থান নেয়।
অনশন চলাকালে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু সভাপতির বক্তব্যে বলেন, পুলিশ বিএনপির গনতান্ত্রিক ও মানবিক কর্মসূচিতে তান্ডব চালিয়েছে। পুলিশের এহেন অসভ্য, অমানবিক ও নগ্ন আচরণ শান্তিপ্রিয় জনগন মোটেই সমর্থন করে না। খুলনার পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশ্যে বলেন, কার নির্দেশে এবং কাকে খুশি করার জন্য এ ধরনের নগ্ন হামলা চালিয়েছেন? একদিন তার জবাব দিতে হবে। সেদিন আর বেশি দুরে নয় অবৈধ সরকারের পদলেহন কারিদের চিহ্নিত করে একটি একটি করে বিচার করা হবে।
খুলনার পুলিশের অশোভন আচরনের বিচার দাবি করে সাবেক সাংসদ মঞ্জু বলেন, দেশব্যাপী মৌলিক অধিকারের দাবিতে মানবিক কর্মসুচি পালিত হচ্ছে কিন্তু খুলনার পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে পুলিশ যে তান্ডব চালিয়েছে তা মোটেই কাম্য ছিলো না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দুইবারের বিরোধী দলের নেত্রী ছিলেন। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে সুস্বাস্থ্য তার মৌলিক অধিকার। কিন্তু বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বেগম খালেদা জিয়াকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চাচ্ছে। সরকার মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে তাকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করছে। কারাগারে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় বর্তমানে তার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন। এমন পরিস্থিতিতে মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ মতো বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দেয়া চরম নিষ্ঠুরতা। গনআন্দোলন গড়ে তুলে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। আর সেজন্য নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারের জন্য প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়েছেন।
বিকাল ৪টায় বিশিষ্ট ভাষা সৈনিক ও খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. বজলুর রহমান নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙ্গান।
এদিকে অনশন চলাকালে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জান মনি, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খান, এড. গাজী আব্দুল বারী, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, সেকেন্দার জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, এড. বজলুর রহমান, এস আর ফারুক, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, রেহানা আক্তার, সিরাজুল হক নান্নু, আবু হোসেন বাবু, জি এম কামরুজ্জামান টুকু, মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ প্রমূখ।
এছাড়াও গণ অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গালিব ইমতেয়াজ নাহিদ।