দরবেশ জানে কিভাবে টাকা গুনে খেতে হয় - গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩২ এএম, ২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৩০ এএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশে একজন দরবেশ আছে। সেই দরবেশ নাকি আবার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। যার বাবা ছিল প্রখ্যাত রাজাকার। দরবেশ ভালো করে জানে কিভাবে টাকা গুনে খেতে হয়, কিভাবে টাকা ছাপাতে হয়, কিভাবে টাকা লুট করতে হয়। শেয়ার মার্কেটই তার প্রধান উদাহরণ।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, ধারদেনার এই সরকার বিদেশ থেকে যত টাকা ধার করেছে, তা আগামী ২০২২ সাল থেকে পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু অর্থ কোথায়? সব তো বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। উন্নয়নের নামে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। বিদেশ থেকে টাকা ধার করে সেই ধারের টাকা চুরি করে আবার বিদেশে পাঠিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় সরকারের দালাল নিয়োগ করেছে, যারা বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশো করে বেড়ায়। এই দালালদের কি আপনার পথে-ঘাটে পান না? তাদেরকে কিন্তু কিছু উপহার দিতে হবে। না হলে তাদের দালালি আরো বেড়ে যাবে। চাপা-চোপার জোরে তারা মিথ্যাকে সত্য প্রমাণিত করার চেষ্টা করেন। সুতরাং সরকারের পাপের বোঝা অনেক ভারী। তাদের চলে যাওয়ার সময় হয়েছে। এখন আপনারা যদি চান, তাহলে রাখতে পারেন। আর আপনারা যদি না চান, তাহলে বিদায় করে দিতে পারেন। তবে দেশে কোনো পরিবেশ-পরিস্থিতি নাই শেখ হাসিনাকে রাখার মতো। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, জনগণের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায় তখন জনগণ চুপ করে বসে থাকতে পারে না। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে কার স্বার্থে? বাজারে কোনো জিনিসপত্রের অভাব নাই, অথচ দাম বেশি। অর্থনৈতিক ভাষায় সাধারণত বাজারে যখন পণ্যের যোগান কম থাকে, ক্রেতার চাহিদা বেশি থাকে তখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হয়। কিন্তু সব কিছুই পর্যাপ্ত আছে, সব কিছুর উৎপাদন আছে অথচ মাঝখানে দ্রব্যের মূল্য বাড়ছে কার স্বার্থে? একমাত্র আওয়ামী লুটেরা সিন্ডিকেটের স্বার্থে। তিনি আরও বলেন, দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের পাশাপাশি অন্যান্য জিনিসের দাম বাড়ছে। যারা ব্রিজে রডের বদলে বাঁশ দেয়, তাদের দাম বাড়ছে, পুলিশের দাম বাড়ছে। অন্যদিকে দাম কমছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের, মানুষের মূল্যবোধের। দাম কমছে সৎলোকের, যারা দিন আনে দিন খায়। পরিশ্রম করে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সহিষ্ণু না অসহিষ্ণু এটাই তো একটা নাৎসিবাদী, ফ্যাসিবাদী ও গণবিরোধী কথা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন আওয়ামী লীগ পরমতসহিষ্ণু রাজনীতি করে বলেই অন্যরা রাজনীতি করতে পারছে। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণু না অসহিষ্ণু এটাই তো একটা নাৎসিবাদী, ফ্যাসিবাদী ও গণবিরোধী কথা।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এখন বাড়াবে ডিজেলের দাম। এগুলোর দাম বাড়লে আওয়ামী লীগের কিছু যায় আসে না। কারণ তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদেরকে জনগণের দরকার নেই। এই কারণে একের পর এক দ্রব্যমূল্যে বাড়াচ্ছে। ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বায়ু দূষণের শহর হল ঢাকা। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে কয়লা পুড়িয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করা ঠিক হবে না। পার্শ্ববর্তী যে দেশ থেকে কয়লা আমদানি করা হচ্ছে সে দেশে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে নাই। কিন্তু আমার দেশে করা হচ্ছে। যে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন উজাড় করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে সেই প্রধানমন্ত্রী গ্লাসগোতে পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলনে গিয়েছে। মানে একজন বুড়ি নিত্য প্রদর্শন করতে চাচ্ছে। কিন্তু তার নাচের তাল নেই তিনি সেটা জানেন না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, মিনি বন্দরে ভারত চাল বন্ধ করে দিয়েছে। আপনাদের সাথে এত খাতির, এত প্রেম তারপরও কেন চাল বন্ধ করে দিয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর প্রধানমন্ত্রী ও কাদের সাহেব বা অন্য কোনো মন্ত্রী দিতে পারবেন? এখনতো বর্ডার খোলা থাকার কথা ট্রাকে ট্রাকে চাল আসার কথা। কিন্তু চালের ট্রাকা আর ঢুকছে না, এর জবাব আপনি দিতে পারবেন না।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।