জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরবে-গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫৩ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ০৪:১৩ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে দেশে গণতন্ত্র অবশ্যই ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন। সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৮০ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকারকে হটাতে হবে-ওয়াদা করি প্রতিদিন। ডেইলি প্রতিশ্রুতি দেই। দলের ভেতরে বিভেদ চলবে না, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু এখান থেকে বাইর হয়ে গিয়ে ৩/৪ জন লইয়া দোকানে বইসা কারে সাইজ করতে হবে- তা নিয়ে আলাপ করি আমরা। এরকম হলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। ফাস্ট অব অল- স্ট্রাগল ফর ইউনিটি। অর্থাৎ দলের মধ্যে আমাদের শক্তি যতটুকুই আছে ওইটুককে আমরা ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সংগ্রাম করি। তারপরেই আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুভমেন্টটা করব। এটা আমার কথা নয়, মাও সেতুংয়ের কথা।
তিনি বলেন, জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, দেশ থাকবে, দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে। জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ হয় গণতন্ত্র অবশ্যই ফিরে আসবে। গণতন্ত্র যদি নিশ্চিত করতে পারি শুধু বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান কেনো দেশের ১৮ কোটি মানুষই মুক্তি পাবে, দেশেই থাকবে, দেশেই আসবে, স্বাধীনভাবে চলবে, জনগণের পাশে থাকবে। এখন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান করছেন যতটুকু এখন বাকি দায়িত্বটা আমরা অকৃত্রিমভাবে আন্তরিকভাবে সমাধান করি এবং আন্দোলনের মাধমে দেশটাকে মুক্তি করি।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহসের প্রয়োজন সেটা আওয়ামী লীগের নাই। জিয়াউর রহমান যখন স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন তখন আওয়ামী লীগের নেতারা সবাই অবনত মস্তকে বিনা প্রতিবাদে, বিনা প্রশ্নে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। কেনো তাকে প্রশ্ন করেনি আপনি কে? কারণ জনগণের মনের কথা জিয়াউর রহমান বলেছেন। সেজন্য জিয়া এদেশের কোটি মানুষের নিকট আত্মার আত্মীয়। মুছে ফেলার চেষ্টা চলে কিন্তু মোছা যায় না। এই ঐতিহাসিক সত্য কখনো মোছা যায় না। কাউকে নায়ক-মহানায়ক বানানো যায় এবং ভালো চলচ্চিত্রকার হইলে সেটাকে একটা ছবি আকারে পর্দায় ঠেকানো যায়, সেই নায়কের কর্মকান্ড দেখে মানুষ আবেগ আপ্লুত হয়, চোখে জলও ফেলে কিন্তু সেটা গল্প, সেটা তো নাটক, সেটা সিনেমা। সেটা তো ইতিহাস না। হিস্ট্রি অলওয়েজ ফ্যাক্ট। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, তার আবির্ভাব, তার কর্মকান্ড প্রতিটি ফ্যাক্ট, গল্প না। সেই কারণে তিনি একটি ইতিহাস।
সভাপতির বক্তব্যে কৃষক দলের আহবায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, কেউ যদি মনে করেন নির্বাচন করে এই সরকার পরিবর্তন করবে। কারণ নির্বাচনি ব্যবস্থাকেই তো এই সরকার শেষ করে দিয়েছে। তাই বলব, রাস্তায় নামা ছাড়া সরকার পরিবর্তনের অন্য কোনো বিকল্প নেই। আমাদেরকে সেজন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে। এই সরকার তারেক রহমানকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায় মন্তব্য করে কৃষকদলের আহবায়ক বলেন, তারেক রহমানকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায় এই সরকার ও শেখ হাসিনা। যে মানুষটা একটা নির্বাচনও করে নাই, তার বিরুদ্ধে এমন কোনো মিথ্যা অপবাদ নাই যা এই শেখ হাসিনা দেয় নাই। তাই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সে যদি দেশে ফিরে না আসে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না। সেইজন্যে আমাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রস্তুতি মানে সংগঠন, সংগঠন মানে রাস্তা, রাস্তা মানে আন্দোলন। সেই আন্দোলনে আমাদের করতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, জীবনের একটা অর্থ থাকতে হবে। সেই অর্থটা হচ্ছে শহীদ জিয়ার জীবনের সাথে আমাদের জীবনকে মিলিয়ে নিতে হবে। সেই জীবনকে মিলিয়ে নিতে হবে বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের সাথে। সেই জীবনকে মিলিয়ে নেবেন তারেক রহমানের জীবনের সাথে। কি পেলাম কি পাই নাই বাদ দেন। পেতে হবে গণতন্ত্র, পেতে হবে স্বাধীনতা, পেতে হবে বাংলাদেশ, পেতে হবে খালেদা জিয়া, পেতে হবে তারেক রহমান। এর মধ্য দিয়েই আমাদেরকে মীমাংসা করতে হবে।
কৃষক দলের সদস্য এসকে সাদীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, উলামা দলের আহবায়ক অধ্যক্ষ শাহ নেছারুল হক, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম আহবায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নাসির হায়দার, মাইনুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলিম হোসেন, কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মোজাম্মেল হক মিন্টু সওদাগার, আলহাজ¦ খলিলুর রহমান ভিপি ইব্রাহিম, এম জাহাঙ্গীর আলম, মীর মমিনুর রহমান সুজন, শফিকুল ইসলাম, আব্দুর রাজি, হারুন সিকদার, আসাদুল আরিশ ডল, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।