সরকারের পদত্যাগ করা উচিত - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৭ এএম, ২৫ অক্টোবর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৪২ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশ অশান্তিতে রয়েছে। মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যেসব সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে, তাতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ জড়িত।
আজ রবিবার সকালে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে এসব কথা বলেন তিনি। মাজার জিয়ারতের সময় বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে দলের সিলেটের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন। এদিন সকালে বিএনপি নেতা ফজলুল হক আসপিয়ার স্মরণসভায় যোগ দিতে সিলেটে আসেন মির্জা ফখরুল। সেখান থেকে তিনি সুনামগঞ্জে স্মরণসভায় যোগ দেবেন।
মাজার জিয়ারত করে বেরিয়ে এসে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সমস্যাগুলো তৈরি করা হয়েছে। আপনারা পত্রপত্রিকায় দেখেছেন, এর নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা? নেতৃত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগের ছেলেরা, নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। আজও পত্রিকায় এসেছে, রংপুরের ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সৈকত।
তিনি বলেন, এটা খুব পরিষ্কার, সরকারের যেহেতু জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, যেহেতু জনগণের ভোট তারা পায় না সে জন্য জনগণের দৃষ্টিটাকে ভোটের অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার থেকে সরানোর জন্য এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না বলে অভিযোগ ফখরুল বলেন, আমাদের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের যারা আছেন, তাদের নিরাপত্তা সরকার দিতে পারছে না। একই সঙ্গে আমাদের যে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী আছে, মুসলমান সমাজ, ইসলাম ধর্মে যারা বিশ্বাস করেন, তাদেরও এখানে কোনও নিরাপত্তা নেই। সামগ্রিকভাবে জনগণের নিরাপত্তা দিতে সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার সম্পূর্ণভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। সরকার হিন্দু ও বৌদ্ধদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি বৃহত্তর জনগোষ্ঠী মুসলিম সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ হয়েছে। সরকার সাম্প্রদায়িকতা বন্ধ করতে ব্যর্থ। জনগণের সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরাতে সাম্প্রদায়িকতা করছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন করা দাবি থেকে দৃষ্টি সরাতে চায়। দেশে খুন-ধর্ষণ-অরাজকতা থেকে দৃষ্টি সরাতে এই ঘৃণ্য কাজ করছে। ছাত্রলীগের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক হাতেনাতে ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। সাম্প্রদায়িক হামলায় যে দুই জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তারা ছাত্রলীগ নেতা। কুমিল্লার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের মৌলিক অধিকার ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্তম্ভগুলো নষ্ট করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার বিভাগ দলীয়করণ করেছে। প্রশাসন দলীয়করণ করেছে। গণমাধ্যমগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন থেকে সাংবাদিকরা রেহাই পাচ্ছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেলে রাখা হয়েছিল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে আছেন। বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে সরকার। পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজারখানেক নেতাকর্মী খুন হয়েছে। চরম নৈরাজ্য ও গণতন্ত্রহীনতার মধ্যে দেশবাসী। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনসহ জেলা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।