ঘোষণা দিয়ে আ. লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, নিহত ১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ২৪ অক্টোবর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩২ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ফরিদপুরের সালথায় ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে মারিজ সিকদার (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে অন্তত ৫০টি বসতঘর।
গতকাল শনিবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকটা শটগানের ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে গত ১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আব্দুর রব মোল্যা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তার বিপরীতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ সমর্থক গ্রাম্য মাতবর মো. রফিক মোল্যা ও নুরজ্জামান টুকু ঠাকুর। রফিক মোল্যা ও টুকু ঠাকুর খারদিয়া এলাকার একই দলের নেতৃত্ব দেন কয়েক বছর। তাদের বাড়িও একই গ্রামে।
গত এক মাস আগে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে বিরোধ জের ধরে রফিকের সাথে বিরোধের সূত্রপাত হয় টুকু ঠাকুরের। তিনি নৌকার মনোনীত প্রার্থী রব মোল্যা ও তার সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর মিয়ার দলে যোগ দেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকার দলের প্রার্থী রব মোল্যার সমর্থক আলমগীর মিয়া ও টুকু ঠাকুরের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী রফিকের বিরোধ চলছিল। এরই জেরধরে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে উত্তেজনা শুরু হয়। সালথা থানা পুলিশের কঠোর পদক্ষেপে শুক্রবার রাতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, রাতেই বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সকালে সংঘর্ষের জন্য প্রস্ততি নিতে ঘোষণা দেয় উভয় দলের লোকজন।
শনিবার সকাল থেকে খারদিয়া এলাকায় উভয় প্রার্থীর হাজারো সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জড়ো হতে থাকে। একপর্যায় দুপুর ২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সংঘর্ষ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সংঘর্ষকালে কয়েকটি বসতঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়।
এতে মারিজ সিকদার, নাসির মোল্যা, রহিম মোল্যা, রশিদ শেখ, সাকির মোল্যা ও টেপু শেখসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে বিকাল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রফিকের সমর্থক মারিজ সিকদার মারা যান। তিনি খারদিয়া গ্রামের সওরাফ সিকদারের ছেলে।
এদিকে মারিজের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্তত ৫০টি বসতবাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করার খবর পাওয়া গেছে।