দাদুভাই ছিলেন গণতন্ত্র ও জনগণের মুক্তির সকল সংগ্রামের অগ্রসেনানী - মঞ্জু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৯ পিএম, ২১ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩৩ এএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, এম নুরুল ইসলাম দাদুভাই ছিলেন গণতন্ত্র ও জনগণের মুক্তির সকল সংগ্রামের অগ্রসেনানী। দৃঢ়তা, অটুট মনোবল, সাহস, ধৈর্য্য এবং ব্যক্তিত্বে তিনি ছিলেন অনন্য উচ্চতার একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিবিদ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীকার আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় খুলনা প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে সাবেক এমপি ও বিএনপির খুলনা মহানগর শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এম নুরুল ইসলাম দাদুভাইয়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ১/১১ এর অবৈধ সরকারের সময়ে দেশের এক চরম রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে তিনি দলের যোগ্য নেতৃত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। বর্তমানে গণতন্ত্রহীন রাজনীতির এই বিপদজনক যুগে দাদু ভাই-এর মতো নেতার খুবই প্রয়োজন ছিলো। ১/১১ এর অবৈধ সরকারের শত প্রলোভন ও চাপ সৃষ্টি করেও তাকে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের মূলধারা থেকে বিচ্যুত করতে পারেননি। ওই সময়ে তার সাহসী ভূমিকা নেতৃত্বের এমন এক স্তরে উন্নীত করেছিলো, যা ছিল হিমালয়তুল্য। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির কঠিন দুর্যোগকালে দাদুভাই গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছিলেন। একবছর আগে আজকের এই দিনে তিনি লাখ লাখ মানুষের শ্রদ্ধা, ভালবাসা এবং আবেগে সিক্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। কিন্তু আজও তিনি বেঁচে আছেন এবং বেঁচে থাকবেন অসংখ্য মানুষের মনিকোঠায়। তিনি একজন দৃঢ়চেতা, আদর্শনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসাবে দেশের মানুষের মনে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ট থাকবেন। দেশবাসী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা তাঁর সাহস, সৃজনশীলতা ও মননশীলতাকে অনুসরণ করে তাকে আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণে রাখবে।
সাবেক এমপি মঞ্জু আরও বলেন, ১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে পাকিস্তানের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম সোচ্চার ছিলেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। গণতন্ত্রী দলের সংগঠক হিসেবে ৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে খুলনাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৭ সালে মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি আত্মপ্রকাশ করলে তিনি গণতন্ত্রী দল ছেড়ে ন্যাপে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে খুলনা পৌরসভার জাহানাবাদ ইউনিয়নে নির্বাচনে নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে খুলনা শহর ন্যাপের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৮ সালে গড়ে ওঠে জাগদল। তিনি তখন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের রাজনীতির ধারক বাহক হিসেবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু করেন। দায়িত্ব পান বিএনপি’র শহর শাখার সভাপতির। তিনিই শহর শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ২০০১ সালে খুলনা-৪ আস থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী দর্শনকে বুকে ধারণ করে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচারের কবল থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রত্যেকটি আন্দোলন সংগ্রামে দাদু ভাই’র অবদান দল ও দেশবাসী চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
সভায় বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সভাপডিত এড, শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, আমির এজাজ খান, এড, বজলার রহমান, এড. গাজী আব্দুল বারী, প্রফেসর আব্দুল মান্নান, প্রফেসর ড. রেজাউল করিম, রোজি রহমান, সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সী, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মুশাররফ হোসেন, সেকেন্দার জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, এড. ফজলে হালিম লিটন, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুর রশিদ, আরিফুজ্জামান অপু, আবু হোসেন বাবু, রেহানা ঈসা, এড. তসলিমা খাতুন ছন্দা, নাজমুল হুদা সাগর, মুজিবুর রহমান, শরিফুল ইসলাম বাবু, শেখ আবু সাঈদ প্রমূখ। আসাদুজ্জামান মুরাদ ও ওহেদুজ্জামান রানার পরিচালনায় সভায় এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাইয়ের জীবনী প্রবন্ধ উপস্থাপন করে অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম।