আওয়ামী লীগ বিভেদ সৃষ্টির কারখানা : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ২১ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩৪ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে সকল ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনার সাথে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল জড়িত আওয়ামী লীগ এই কথা বলছে। আমার প্রশ্ন হলো আপনারা কেন এ ধরনের কথা বলছেন? আপনারা যখনই এ ধরনের কথা বলেন তখনই জনগণের মনে আরো সন্দেহ সৃষ্টি হয় যে আপনারাই সুপরিকল্পিতভাবে কুরআনকে অবমাননা এবং হিন্দুদের উপর আক্রমণের মতো জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মৎসজীবি দলের আয়োজনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য নষ্ট করেছেন। এই দেশে কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনো বিবেধ ছিলনা। জনগণের মধ্যে বিভিন্ন বিবেধ সৃষ্টি করেছে তারা। এই আওয়ামী লীগ হচ্ছে বিভেদ সৃষ্টি করার কারখানা। আগে তো কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা শুনি নাই। আপনাদের আমলে তা শুনছি। কেন আপনাদের আমলে নিজেদেরকে সেকুলার দাবি করেন? আর আপনাদের সময়ে এই সাম্প্রদায়িক ঘুমন্ত দানবকে জাগিয়ে তুলে দেশে রক্তপাত সৃষ্টি করেছেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় যে অনুসন্ধানীমূলক রিপোর্ট করছে প্রত্যেকটাতে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নাম আসছে।
হাজীগঞ্জের হৃদয় ছাত্রলীগের ছেলে সে তার লোকজন দিয়ে কুমিল্লায় একটা প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে সেখানে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে এবং পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী তার লোকজনই এ ধরণের কর্মকাণ্ড করেছেন। সেই মেহেদী বলেছে, সে না খোকন নামের ছাত্রলীগের সভাপতি সে এই কাজ করেছে। অথচ বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলুর নামে মামলা দিয়ে দিলেন তারা। নোয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করলেন যুবদলের নেতাকর্মীদেরকে। কিন্তু কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসছে।
সাম্প্রদায়িকতার ঘুমন্ত দানবকে জাগিয়ে তুলে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে এই সরকার কিন্তু এই দানব যে তাদেরই ঘাড় মটকে দেবে এইটা এখনো টের পাচ্ছেন না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই মুখপাত্র।
তিনি বলেন, এরা (আওয়ামী লীগ) এমন একটি দল জনগণের রক্ত শুষে নিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চায়। এটাই তাদের অভিপ্রায়। এটাই হচ্ছে তাদের রাজনীতির কর্মসূচি। এই কর্মসূচি নিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করে মানুষের ভোটের অধিকার হত্যা করে ডাকাতের মতো করে ক্ষমতায় বসে আছে ১৪ বছর ধরে। মিথ্যা দিয়ে টিকে থাকাই তাদের মূল লক্ষ্য সেটাই তারা চেষ্টা করছে। কমিল্লার পূজামণ্ডপসহ দেশের অন্য অঞ্চলের যে ঘটনা আমরা বারবার বলে আসছি এটা সরকার জড়িত সেই জিনিসগুলো প্রতিদিন বেরিয়ে আসছে। তাদের সেনসারর্শিপ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ফেসবুকে কিছু লিখলেই গ্রেপ্তার হয় এত কিছুর পরেও সত্য বেরিয়ে আসছে। বেরিয়ে আসছে এসব ঘটনার সাথে তাদের ছাত্রলীগ-যুবলীগ জড়িত।
তিনি বলেন, তাদের এই অত্যাচার দুর্নীতি ঢেকে রাখার জন্যই দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। তাদের এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাথে কেউ কথা বলতে না পারে তার জন্য বেগম খালেদা জিয়া বন্দি এবং বিএনপি'র নেতাকর্মীদের নামে লাখ লাখ মামলা। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয় তাদের ইলেকশন করতে হয় না জনগণের কাছে যেতে হয় না।
সংগঠনের সভাপতি মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, উলামা দলের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের নাদিম চৌধুরী, সেলিম মিয়া, জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুক পাটোয়ারি, কামাল উদ্দিন চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম রাশেদ, সাইদুল ইসলাম টুুলু, জহিরুল ইসলাম বাশার, আমির হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।