আপনি আগুন নিয়ে খেলছেন প্রধানমন্ত্রীকে রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৯ এএম, ২০ অক্টোবর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:১৩ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনারা খাল কেটে কুমির আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এক সময় সে কুমির যে সবকিছু গ্রাস করবে শেখ হাসিনা আপনি এটা টের পাচ্ছেন না। আপনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে, নানাভাবে উস্কানি দিয়ে, দেশের দীর্ঘদিনের যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য সেটা বিনষ্ট করছেন। আপনি নিজের ফায়দা লুঠবেন? আপনি খাল কেটে কুমির নিয়ে আসবেন? এই কুমির যে আপনার সরকারকে খেয়ে ফেলতে পারে, দেশের তো সর্বনাশ হবেই। আপনার ও আপনার সরকারকে রক্ষা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে। আপনি যে আগুন নিয়ে খেলছেন সেই আগুনে আপনার সরকার ছারখার হয়ে যাবে। আপনি টিকিয়ে রাখতে পারবেন না।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আয়োজনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের প্রতিটি ঘটনায়, রোগে শোকে ক্লান্তিতে, এই দুর্বিষহ দুঃশাসনের মধ্যেও যিনি প্রচন্ডপ্রতাবে, চারদিকে গুম-খুন স্তব্ধতায় যিনি অভয় মন্ত্র শোনান আমাদের সেই প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে শেষ করার জন্য শেখ হাসিনা সকল আয়োজন সম্পন্ন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু আমাদের জাতীয়তাবাদী শক্তি যাদের অন্তরে সামান্য পরিমাণ স্পন্দন আছে আমরা কি হাসিনার সেই নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে দেবো? দেবো না। শেখ হাসিনার এই ময়ূর সিংহাসন স্থির রাখা যাবে না। এই ময়ূর সিংহাসন আমাদের উল্টাতে হবে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যিনি তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। যিনি গণতন্ত্রকে বার বার গভীর গর্ত থেকে মুক্ত আকাশে মেলে দিয়েছেন। যার স্বামী বাকশালের গুহা থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছেন এবং আমাদের মুক্ত কথা বলা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতার কার্পণ্য করেননি বেগম খালেদা জিয়া। যিনি নয় বছর লড়েছেন গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে, এরশাদের বিরুদ্ধে। নয় বছর আপোসহীন থেকে তিনি গণতন্ত্র মুক্ত করেছেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বা গতপরশু বলেছেন আমাদের উন্নয়ন তাদের সহ্য হয় না। আপনার উন্নয়ন সহ্য হয় না? না আমাদের গণতন্ত্রের কথা বলা এটা আপনাদের সহ্য হয় না? এই গণতন্ত্র মুক্ত করার জন্য আমরা লড়াই করছি। আপনাদের যে সহ্য হয় না তার প্রমাণ ২০১৮ সালে দিনের বেলা ভোট করতে সাহস পাননি। আপনারা নিশিরাতে মিডনাইট নির্বাচন করেছেন। আর নিশিরাতের নির্বাচন নিশ্চিত করতে ১০ মাস আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করলেন যে মামলায় তিনি ন্যূনতম জড়িত ছিলেন না। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করলেন। তার মানে আপনাদের কত ভয়, কত আতঙ্ক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে।
রুহুল কবির রিজভী ক্ষমতাসীনদের প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনাদের জেলা-উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সবাই শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ব্যস্ত তাহলে কুমিল্লার ঘটনা ঘটলো কেন? সেখানকার জনগণ প্রশাসনকে জানিয়েছে তাড়াতাড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেন কিন্তু প্রশাসন সেটাও করেনি। পুলিশ সঠিক সময়ে আসেননি। সঠিক সময় পুলিশ আসেনি বলে রক্তাক্ত এর ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লায় ফেনীতে চাঁদপুরে রংপুরে। কারণ আপনারা সে নিরাপত্তা দিতে রাজি নন। বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, এই অরাজকতার মুহূর্তে আমাদের কত প্রয়োজন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। আজকে তাঁর যে অস্তিত্ব এটাই তো আমাদের প্রেরণা দেয়। আমরা যখন মিছিল করি, মুক্ত কন্ঠে বক্তৃতা করি, জেলে থাকি তখন প্রেরণা দেয় আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সুতরাং জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে পারবে না কেউ। সুতরাং আমরা একাগ্রচিত্তে একীভূত হতে পারলে এই দানবীয় স্বৈরশাসককে সারাতে পারবো। এ সময় যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, মহানগর উত্তরের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিল্টন প্রমুখ বক্তব্য দেন।